সোমবার, ১১ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

দেশের মাটি সন্ত্রাসে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো দেশের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য বাংলাদেশের মাটি কাউকে ব্যবহার করার সুযোগ দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে বর্তমান সরকারের দৃঢ় অবস্থান ও জিরো টলারেন্স নীতি। বাংলাদেশে কোনো ধরনের বিদ্রোহ বরদাস্ত করব না। আমরা এ অঞ্চলে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। গতকাল সকালে গণভবনে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিদ্যুত্, পল্লী, নগর উন্নয়ন ও পরিবহনমন্ত্রী মানিক দে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে গেলে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের কর্মকর্তারা শুল্ক ও অন্যান্য বিষয় চূড়ান্ত করেছেন বলে জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। 

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, উভয় পক্ষ যথাশিগগির সম্ভব বিদ্যুত্ ক্রয় ও সরবরাহ সংক্রান্ত অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের জন্য আরও বিদ্যুত্ লাগবে। দুই দেশের মধ্যে স্থলসীমান্ত চুক্তির পর সব ছিটমহল বিনিময়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান এবং তার সরকার দেশে আরও শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা করার পদক্ষেপ নিয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার রেলপথগুলো বাংলাদেশ পুনরায় খুলে দিতে চায়। সরকার রেল যোগাযোগ আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত রেলপথে ডুয়েল গজ রেল লাইন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সম্ভাবনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদার করার লক্ষ্যে ভারত এই বন্দর ব্যবহার করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত ও তাদের জনগণের মূল্যবান অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং ভারতের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী, সরকার, জনগণ ও বিশেষ করে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ত্রিপুরার মন্ত্রী এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নজিরবিহীন উন্নয়ন সাধন করেছে। ত্রিপুরার মন্ত্রী ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে ত্রিপুরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর এবং আগরতলায় প্রায় এক লাখ লোকের সমাবেশে তার ভাষণ দেওয়ার কথা স্মরণ করেন। এ প্রসঙ্গে মানিক দে ত্রিপুরা থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরা থেকে শিগগিরই বিদ্যুত্ সরবরাহ শুরু হবে।

ত্রিপুরার মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কুমিল্লা সীমান্তের কাছে ত্রিপুরায় মনারচরে রাজ্য সরকার একটি বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণ করছে। বিদ্যুত্, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. আবুল কালাম আজাদ এবং বিদ্যুত্ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর