বুধবার, ২০ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাবলু বাদ, ফের মহাসচিব রুহুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পার্টির মহাসচিব হিসেবে ফের দায়িত্ব পেয়েছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। গতকাল দুপুরে বনানী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ ঘোষণা দেন। এর আগে ২০১৩ সালের ১০ এপ্রিল রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে জিয়াউদ্দিন বাবলুকে মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ দেন পার্টির চেয়ারম্যান।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, আমি হাওলাদারকে সরিয়ে বাবলুকে মহাসচিব করেছিলাম। বাবলু দুই বছরেও দলের বর্ধিত ও প্রেসিডিয়ামের সভা ডাকতে পারেনি। তিনি পার্টির প্রেসিডিয়াম ও বর্ধিত সভা ডাকতে পারেন না। জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান ঘোষণার পর বাবলু পার্টিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন। তাকে মহাসচিব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। এরশাদ বলেন, আমার স্ত্রী রওশন এরশাদের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। তিনি সংসদ চালাবেন, আমি পার্টি চালাব। আমাদের মধ্যে বিভেদের চেষ্টা করা হয়েছে। রওশন প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, আমার স্ত্রী প্রেসিডিয়ামের কোনো বৈঠক ডাকেননি। সেখানে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। উনাকে দিয়ে তারা স্টেটমেন্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। উনি স্টেটমেন্ট দেননি। এই পার্টিকে কেউ বিভক্ত করতে পারবে না। এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি ছোটভাই জি এম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যান নিযুক্ত করায় এরশাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পরদিন ১৮ জানুয়ারি রাতে পাল্টা কমিটি করা হয়। রওশন এরশাদের গুলশানের বাসায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদীয় দলের একাংশের যৌথ সভায় রওশন এরশাদকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন জিয়াউদ্দিন বাবলু। তবে ওই সময় বাবলু সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি। দলে ভাঙনের সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন— অসম্ভব, জাপা ভাগ হবে না। আমি জাপার চেয়ারম্যান। যারা এর আগে চলে গেছে, তাদের সঙ্গে ৮-১০ জন লোকও যায়নি। যে দুজন দলে বিভ্রান্তির চেষ্টা করছেন, তাদের সঙ্গেও কেউ নেই। আজকের ঘটনায় জাপায় নবজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। ছোটভাই জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান ঘোষণার একদিন পর গতকাল জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত নিলেন এরশাদ। সংবাদ সম্মেলনে এরশাদের বাম পাশে ছিলেন জি এম কাদের। ডান পাশে ছিলেন এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ফয়সল চিশতী কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম মাওলা চৌধুরী, আলমগীর শিকদার লোটন, রেজাউল ইসলাম ভূ্ইয়া, জহিরুল আলম রুবেল, নুরুল ইসলাম নুরু, জাফরউল্লা মজুমদার আজাদ, আশরাফ সিদ্দিকী, মাহমুদা রহমান মুন্নী, এনাম জয়নাল আবেদীন, ইফতেখার আহসান হাসান প্রমুখ। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, জি এম কাদের পার্টির কো-চেয়ারম্যান। আমি তাকে যেটুকু দায়িত্ব দিবো তিনি ততোটুকুই পালন করবেন। আর হাওলাদার এর আগেও তিনটি কাউন্সিল সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। তার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই তাকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব নির্বাচিত করা হয়েছে। এরশাদ আক্ষেপ করে বলেন, সর্বশেষ কাউন্সিলে কাজী জাফরকে চেয়ারম্যান ও হাওলাদারকে সদস্য সচিব করেছিলাম, এর আগে ব্যারিস্টার আনিসকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছিলাম, হাওলাদারকে সরিয়ে দিয়েছিলাম, তখন তো গঠনতন্ত্রের কথা বলা হয়নি। এখন কেন বলা হচ্ছে। আমি পার্টির চেয়ারম্যান, আমার ক্ষমতা রয়েছে। আমি ৩৯ ধারা মোতাবেক যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি। পরে সেটা প্রেসিডিয়ামে পাস করিয়ে নিবো। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ছাড়ার বিষয়ে এরশাদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে সম্মান করেন, আমাকে সম্মানিত করেছেন। আমি উনাকে বলবো, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি সারা দেশ ঘুরে বেড়াবো। পার্টিকে শক্তিশালী করবো। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবো।

সর্বশেষ খবর