সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু তাকে জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব পদ থেকে অপসারণকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করে বলেছেন, দলে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলছে। তবে এ ষড়যন্ত্র সফল হবে না।
জিয়াউদ্দিন বাবলু গতকাল সকালে ঢাকা থেকে আকাশপথে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। বাবলু বলেন, এরশাদ, রওশন এরশাদসহ আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি। আগামী দিনে জাপা নিয়ামক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে।
জাপা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ ১৯ জানুয়ারি জিয়াউদ্দিন বাবলুকে সরিয়ে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব নিযুক্ত করেন। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় পর্যায়ে যে নাটকীয়তা দেখা দেয়, তার প্রভাব পড়ছে চট্টগ্রামেও। হঠাত্ করে রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব করায় চট্টগ্রামের কিছু নেতা-কর্মীর মেজাজ ফুরফুরে হয়ে গেছে। সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা কমিটিতেও কিছুটা পরিবর্তন ঘটবে। বিশেষ করে চার মাসেও মহানগরীর পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়াসহ নানাবিধ কারণে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন মুখ আসতে পারে। মহাসচিব পদে পরিবর্তনের কারণে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক নগর জাপা সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠসহ অনেক নেতা-কর্মী চট্টগ্রামে মিষ্টি বিতরণ করেছিলেন। সোলায়মান আলম শেঠ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ঘোষিত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে মেনে নিতে পারেননি বলেই এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। মাঠে-ময়দানের কর্মীদের সঙ্গেও তাদের যোগাযোগ নেই। ড্রইংরুমে বসে পাউডার মেখে আর বিদেশে গিয়ে রাজনীতি করা যায় না। এটি হচ্ছে ‘পকেট’ কমিটি। তিনি বলেন, জিয়াউদ্দিন বাবলু পার্টি নিয়ে কথা বলার কেউ নন, তিনি শুধু একজন সংসদ সদস্য। তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নগর জাতীয় পার্টিসহ জেলার বেশ কয়েকটি পদে পরিবর্তন আসবে বলে জানান তিনি। জানা যায়, ৩০ ডিসেম্বর দেশের পৌরসভা নির্বাচনে চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি পৌরসভায় মেয়র পদে প্রার্থী দিলেও জেলার সাংগঠনিক তত্পরতা ও নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে ন্যূনতম ভোটও পায়নি জাতীয় পার্টি। তবে পটিয়ায় কঠোর নজরদারি ও তত্পরতা থাকলে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে জানান আবদুল করিমসহ দলের একাধিক নেতা-কর্মী। দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর ১০ সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রামের সম্মেলনে উপস্থিত থেকেই মেহজাবিন মোরশেদ এমপিকে সভাপতি ও এয়াকুব হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করেন দলের চেয়ারম্যান এরশাদ। এর পর থেকে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আজ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। এতে নগর কমিটি না হওয়ায় নেতা-কর্মীদের উত্সাহ-উদ্দীপনাও হারিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সভাপতি মেহজাবিন মোরশেদ এমপি উপস্থিত না থাকায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উঠেছে নানান ধরনের প্রশ্ন। সাধারণ সম্পাদক এয়াকুব হোসেন নামমাত্র কর্মসূচি দিলেও নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি সীমাবদ্ধ ছিল চিহ্নিত কয়েকজনের মধ্যেই।