বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

ব্যতিক্রমও আছে

সোমবার দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিট। অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ফাতেমাতুজ্জোহরা বৃষ্টি নামে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে নেওয়া হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। সঙ্গে ছিলেন বেশ কয়েকজন সহপাঠী ও একজন শিক্ষক। জরুরি বিভাগে চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন সোনিয়া ইসলাম ও ইন্টার্নি চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান। বৃষ্টির সহপাঠীরা যখন উদ্বিগ্ন হয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছেন, তখন ডাক্তার মাহমুদুল হাসান অভয় দিলেন, বললেন ভয়ের কিছু নেই। ভালো হয়ে যাবে। এরপর দ্রুত তিনি বৃষ্টির নাকে একটি নল ডুকিয়ে দিলেন। অচেতন বৃষ্টি জ্ঞান ফিরে পান। পানি পানি করে চিৎকার দিয়ে ওঠেন। কিন্তু সহপাঠীদের কাছে পানি ছিল না। এ সময় ডাক্তার মাহমুদুল দ্রুত ছুুটে যান তার সিটে। সেখানে ব্যাগে থাকা একটি পানির বোতল বের করে আনেন। নিজের হাতেই রোগীকে পানি পান করান। বলেন, ‘কারও বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আগে রোগীকে সুস্থ করুন। এটাই আমার দায়িত্ব। এ সময় বৃষ্টি অনেকটা সুস্থবোধ করেন। তিনি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। এ সময় সহপাঠীদের চোখে দেখা যায় কৃতজ্ঞতার হাসি। ঠিক এই মুহূর্তে জরুরি বিভাগে আনা হয় সুলতানা পারভীনকে। স্বামী তাকে নিয়ে এসেছেন। সুলতানা ঘুমের ওষুধ খাওয়া রোগী। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত মাহমুদুল হাসান নামের ওই চিকিৎসক দ্রুত ছুটে যান সুলতানার কাছে। আন্তরিকতার সঙ্গে তারও চিকিৎসা শুরু করলেন। কিছুক্ষণ পর ওই নারীও চেতনা ফিরে পান। পরে তাকে ওয়াসরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আসে বেবী নামের আরেক রোগী। তাকে গাড়িতে কে বা কারা বেধরক মারধর করেছে। তিনি যখন হাসপাতালে প্রবেশ করেন তখন শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছিলেন না। সে সময় পরম মমতায় চিকিৎসা সেবা দেন ডাক্তার। বেবীর স্বামী লিয়াকত বললেন, ডাক্তাররা রোগীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে বলেই জানতাম, তবে ভালো ডাক্তারও আছে, সেটা আজকে হাসপাতালে না এলে বুঝতে পারতাম না। এক ঘণ্টার মধ্যে এভাবে বেশ কয়েকজন রোগী আসেন। ওই চিকিৎসকের আন্তরিকতায় খুশি হন রোগী ও স্বজনেরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর