বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
লেখকের অন্য চোখ

বেশির ভাগ প্রেমই সুস্থ পরিণতি পেয়েছে

সমরেশ মজুমদার

বেশির ভাগ প্রেমই সুস্থ পরিণতি পেয়েছে

কলকাতার কলেজে পড়তে এসে স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম, কারণ ওই কলেজে নেতাজি এবং বিবেকানন্দ একদা ছাত্র ছিলেন বলে অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম কথাটা সত্যি নয়। এক বন্ধু বলেছিল, ওই কলেজে অনেক সুন্দরী ছাত্রী পড়াশোনা করেন এবং তারা রীতিমতো আধুনিক। কলেজের প্রথম দিনের ক্লাসে গিয়ে আবিষ্কার করলাম ক্লাসরুমের অর্ধেকটা অংশে আমরা, ছেলেরা,     জন্য এসব যন্ত্র কেনা হলেও অকেজো থাকায় এগুলো থেকে রোগীরা সেবা পাচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি হাসপাতালের রোগীদের ছুটে যেতে হয় বাইরের প্রাইভেট বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। যেখানে রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বেশি টাকা খরচ করতে হয়। এর পেছনে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মচারীদের যোগসাজশের অভিযোগ বহু পুরনো। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কিংবা স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে মাঝে মধ্যেই এসব বিষয়ে তদন্ত-পর্যবেক্ষণ করা হলেও এর কোনো সুফল পায় না রোগীরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল, পঙ্গু হাসাপাতাল, ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ও শিশু হাসাপাতালে খোঁজ নিয়ে এক্স-রে মেশিন, লাইনাক মেশিন, কোবল্ট মেশিন, এমআরআই মেশিন বিকল হয়ে থাকার তথ্য পাওয়া পায়। বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতালগুলোর ৪২ শতাংশ চিকিৎসা যন্ত্রপাতিই অব্যবহৃত পড়ে আছে। এগুলোর মধ্যে অর্ধেকটাই বাক্সবন্দী রয়ে গেছে। অন্যগুলোর মধ্যে কিছু আছে মেরামতযোগ্য বিকল, আবার কিছু আছে মেরামত-অযোগ্য। মেডিকেল যন্ত্রপাতির দাম সম্পর্কে দেশের সাধারণ মানুষের কিংবা অনেক ক্ষেত্রে সরকারি পর্যায়ের দায়িত্বশীল মহলের সঠিক ধারণা না থাকায় এ ক্ষেত্রে বড় ধরনের দুর্নীতির সুযোগ থাকে। এসব যন্ত্রপাতি আমদানিকারক ও সরবরাহকারীদের সঙ্গে সরকারি দফতরের বিশেষ চক্রের যোগসাজশের ফলে যখন-তখন এমন কিছু যন্ত্র কেনা হয়, যা সময়মতো চিকিৎসার কাজে লাগানো যায় না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাস্থ্য সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী চক্র কেবল বাণিজ্যের স্বার্থে বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে। সরকারের তরফ থেকেও রোগীদের স্বার্থের কথা বলে ব্যয়বহুল এসব যন্ত্রপাতি কেনার ব্যবস্থা করা হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এসব যন্ত্র পরিচালনার উপযুক্ত কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন লোক থাকে না, কিংবা প্রযুক্তিগত নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি রেখেই কোনোমতে এসব যন্ত্র কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়ে টাকা-পয়সা তুলে নিয়ে যায় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও তাদের আর নাগাল পায় না। এ ছাড়া কোথাও কোথাও আগের যন্ত্রটি চালু না হওয়ার অজুহাতে আরেকটি নতুন যন্ত্র কেনার প্রবণতাও দেখা যায়।

সর্বশেষ খবর