শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

এরশাদ যে কারণে কো-চেয়ারম্যান করলেন কাদেরকে

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের ছোট ভাই গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরের রয়েছে ক্লিন ইমেজ। এরশাদের শাসনামলে কাদের ছিলেন নিজের চাকরি নিয়ে ব্যস্ত। গত মহাজোট সরকারের আমলে মন্ত্রী থাকাকালীনও কোনো দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি তার বিরুদ্ধে।

এ ছাড়াও সারা দেশের নেতা-কর্মীরা পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের মতো রংপুর থেকেই পার্টির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব চায়। প্রতিবেশী ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেরই পছন্দ জি এম কাদের। মিডিয়ায়ও রয়েছে গ্রহণযোগ্যতা। সুশীল সমাজের কাছেও পছন্দের ব্যক্তি। অপরদিকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের বয়স সত্তরের কোঠায়। সব মিলিয়েই এইচ এম এরশাদ অনেক চিন্তাভাবনা করেই পার্টিকে তার অবর্তমানে বাঁচিয়ে রাখতে কাদের তার উত্তরসূরি ঘোষণা করেছেন। এ প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, ‘যারা আমার স্থানে আসতে চান, তাদের উদ্দেশে বলছি, তাদেরও বয়স হয়েছে। নতুন প্রজন্মের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিন।’ তিনি বলেন, ‘আমার ছোট ভাই জি এম কাদেরকে যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নির্বাচন করেছি। আমি বেশি দিন নেই। আমার বিশ্বাস আমার অবর্তমানে সে পার্টির হাল ধরতে পারবে। জি এম কাদের আমার চেয়ে অনেক বেশি লেখাপড়া করেছে।’ প্রসঙ্গত, এরশাদ গত ১৭ জানুয়ারি জি এম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান এবং নিজের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী ঘোষণার পাশাপাশি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব ঘোষণা করেন। এরশাদের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পার্টির এমপিদের বড় একটি অংশ এবং কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্যকে নিয়ে ১৮ জানুয়ারি রওশন এরশাদের বাসায় বৈঠক করে রওশনকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করা হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্তটি মিডিয়ার সামনে পাঠ করেছিলেন তৎকালীন মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। এমন ঘোষণায় এরশাদ পরদিনই জিয়াউদ্দিন বাবলুকে অব্যাহতি দিয়ে রুহুল আমিন হাওলাদারকে পুনরায় মহাসচিব ঘোষণা করেন। এরপর থেকে জাতীয় পার্টিতে একের পর এক নাটক চলছেই। রওশনপন্থিরা এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন রওশনকে কো-চেয়ারম্যান না করা পর্যন্ত তারা এরশাদের সব সভা-সমাবেশ বর্জন করবেন। গত সোমবার রাজধানীতে সারা দেশের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেননি রওশনসহ দলের ৩৫ এমপি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পার্টির কয়েকজন নেতা নিজেদের ফায়দা লোটার জন্য স্যার ও ম্যাডামের বিরোধ জিইয়ে রেখেছেন। পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, অতীতেও বড় দলগুলোতে কিছু কিছু দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। আমরাও তার থেকে বাদ পড়িনি। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আমরা একযোগে কাজ করে আসছি। আমি বিশ্বাস করি, স্যার ও ম্যাডাম অবিচ্ছেদ্য অবস্থানে আছেন। সময়ই বলে দেবে জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ। অনৈক্য ও বিভাজন দলের কারোরই কাম্য নয়।

সর্বশেষ খবর