রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
আ-মরি বাংলাভাষা

বিদেশে ‘বাংলাদেশ কালচার সেন্টার’ গড়ে তুলতে হবে

হাসনাত আবদুল হাই

বিদেশে ‘বাংলাদেশ কালচার সেন্টার’ গড়ে তুলতে হবে

দেশে অবশ্যই প্রমিত ভাষা ও বানান রীতি থাকা প্রয়োজন। একুশের প্রতিশ্রুতি ছিল ভাষা ও সাহিত্য এবং সাংস্কৃতিক জাগরণের জন্য।

এ উদ্দেশ্যে প্রয়োজন ছিল বাংলা চর্চা ও সমৃদ্ধি সাধন। অফিস, আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সর্বস্তরে প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যবহার। উচ্চশিক্ষায় বাংলা ভাষার ব্যবহার একেবারেই সীমিত, এর মূল কারণ বাংলায় লেখা পাঠ্যপুস্তকের অভাব। এ ব্যাপারে বাংলা একাডেমিকে উদ্যোগ নিতে হবে। সর্বস্তরে বাংলা প্রচলনের জন্য বাংলা ভাষায় গ্রন্থ প্রকাশ করতে হবে। বাংলা ভাষায় একাডেমিক বই-পত্র রচনা ও পাঠের মাধ্যমে জ্ঞানচর্চা বৃদ্ধি পাবে। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষায় নিজেদের পাঠ্যবইগুলো পাঠের সুযোগ পেলে তারা আরও সমৃদ্ধ হবে। উচ্চতর গবেষণাও বাংলা ভাষায় হওয়া প্রয়োজন। বাংলা ভাষায় একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা, টেক্সবুক রচনা ও মাতৃভাষা পরিচর্চার ব্যাপারে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে একটি আইন পাস করা যেতে পারে। ফ্রান্সে একাডেমি অব ফ্রান্সের অনুমতি ছাড়া নতুন কোনো শব্দ জনসাধারণের কাছে ব্যবহার করা যায় না। গণমাধ্যমে, বই, পত্রপত্রিকায়, নতুন শব্দ ব্যবহার করতে তাদের অনুমোদন নিতে হয়। আমাদের দেশের রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ এসব নিয়ম মানে না। বিদেশে আমাদের দূতাবাসগুলোতে একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার থাকতে হবে। যেখানে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ বইসহ বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রচনাসমূহের অনুবাদ, তথ্যচিত্র, লিফলেট, পোস্টার ইত্যাদি থাকবে। যা বহির্বিশ্বে বসবাসরত বাঙালি ও তাদের সন্তানরা পড়ার সুযোগ পাবে। বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশ যেমন ইংল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ভারতে আমাদের দূতাবাসের অধীনে ‘বাংলাদেশ কালচার সেন্টার’ গড়ে তুলতে হবে। ভারত আমাদের দেশে ইন্দিরা গান্ধী কালচার সেন্টারের দুটো শাখা চালু করেছে। রয়েছে জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, রুশ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ইরানি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ইত্যাদি। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান, সেমিনার, প্রকাশনাসহ তারা নানাবিধ সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চালাচ্ছে। অথচ বিশ্বের নানা দেশের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও আমরা দেশীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে পারছি না। লেখক : কথাসাহিত্যিক

সর্বশেষ খবর