বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
এটিএম কার্ড জালিয়াতি

এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে হোতারা

বিশেষ প্রতিনিধি

স্কিমিং ডিভাইসের মাধ্যমে এটিএম কার্ড ক্লোনিং জালিয়াতির ঘটনায় এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে হোতারা। তবে ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংকের লোক জড়িত না থাকলে কোনোভাবেই এই জালিয়াতি সম্ভব হতো না। জড়িতরা নিজেদের আড়াল করতে এই কাজে কয়েকজন বিদেশির সহযোগিতা নিয়েছে। দেশি-বিদেশি এই চক্রের কেউ যাতে পালাতে না পারে সে জন্য দেশের সব বিমান ও স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েকজনের ছবি পাঠিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তার দেশীয় এজেন্টদেরও শনাক্ত এবং গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই জালিয়াতির কারণে যেসব গ্রাহক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এটিএম বুথ থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তভার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) দেওয়া হয়েছে। তাদের পাশাপাশি র‌্যাব ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা অভিনব জালিয়াতির বিষয়টি ছায়া তদন্ত করছে। বিষয়টি তদন্ত করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটিও। সম্প্রতি জালিয়াতির ঘটনাগুলো ঘটেছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবিএল), সিটি ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংকের ২১টি বুথে। সেখান থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার বেশি তুলে নেওয়া হয়। বনানী থানায় ইউসিবিএলের দায়ের করা মামলার তদারকি কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মাহফুজুল হক সাংবাদিকদের জানান, বনানী থানায় গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছি। মামলার আংশিক নথিপত্র আমাদের তদন্ত কর্মকর্তা বুঝে নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। ডিবি এখনো কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন খান জানান, মামলা হওয়ার পর তারা স্বল্প সময়ের জন্য তদন্ত করেছেন। এই সময় তারা সন্দেহভাজন বিদেশি নাগরিকের ছবি বিভিন্ন বন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন। এ ছাড়াও দেশীয় এজেন্ট কারা ছিলেন তাদের শনাক্তেরও চেষ্টা করছেন। তারা সিআইডি পুলিশের কাছেও ওই ব্যক্তির চেহারা শনাক্তের জন্য আবেদন করেন। তবে আদালতের অনুমতি ছাড়া সিআইডি সেটা করতে রাজি হয়নি। পরে মামলার নথিপত্র ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ তদন্ত ও গোয়েন্দা বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা জানান, ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের জালিয়াতি সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে ব্যাংকের কর্মকর্তারা জড়িত কিনা সেটা পুলিশি তদন্তের বিষয়।

সর্বশেষ খবর