সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

জমির বিরোধে মানিকগঞ্জে ভাগ্নের হাতে দুই মামা খুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে বৃদ্ধ নিহত

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

জমি নিয়ে পারিবারিক কলহের জের ধরে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার গোবিন্দল গ্রামে ভাগ্নের হাতে দুই মামা খুন হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও এক মামা ও মামাতো ভাইসহ চারজন। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন— আজিজ মোল্লা (৫৫) ও টেন্ডল মোল্লা (৫০)। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও টেঁটাবিদ্ধ করে তাদের হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর পালিয়ে যায় ভাগ্নেরা।

একইদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন কিরন মিয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তি। ওই ঘটনায় পুলিশসহ আহত হয়েছে আরো অর্ধশতাধিক। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত টেন্ডল মোল্লার বোন হাসিনা বেগম এবং আরেক বোনের ছেলে রশিদ বাহরাইনে চাকরি করতেন। পাঁচ মাস আগে নিঃসন্তান অবস্থায় হাসিনা বাহরাইনে মারা যান। হাসিনার উপার্জিত টাকা-পয়সা ও গ্রামের জমিজমা ভাগ্নে রশিদ, জাহিদুল ও জসিম মিলে ভাগাভাগি করে নেয়। এ নিয়ে ভাগ্নে রশিদ, জাহিদুল ও জসিমের সঙ্গে মামা টেন্ডলের বিরোধের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন টেন্ডল। এতে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মামা-ভাগ্নেদের মধ্যে একদফা মারামারি হয়। এ নিয়ে গতকাল সকালে শালিসি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টেন্ডল ও তার ভাই আ. করিম, চাচাতো ভাই আজিজসহ কয়েকজন ভাগ্নেদের বাড়িতে গেলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে জাহিদুল, রশিদ ও জসিমসহ ৭-৮ জন মামা টেন্ডল মোল্লা ও আ. আজিজকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায় এবং টেঁটাবিদ্ধ করে। এতে ঘটনাস্থলে দুজন নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় আ. করিমকে সাভারের এনাম ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি তিনজনকে সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকায় থমথম অবস্থা বিরাজ করছে। স্বজনদের আহাজারি যেন থামছে না। র্যাব-৪ ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন জানান, নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘাতকরা পালিয়ে গেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সরাইলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরে শনিবার রাত ৯টার দিকে ব্যাপারীপাড়া ও মালিগাঁও গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে কিরণ মিয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার ব্যাপারীপাড়া গ্রামের টেলহা মিয়ার ছেলে। সংঘর্ষে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আরশাদসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্র জানায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ব্যাপারীপাড়া গ্রামের রামিন ও মুরসালিন শনিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলা সদরের প্রাতঃবাজার এলাকায় নান্নু মিয়ার দোকানের সামনে ঝগড়ায় লিপ্ত হন। এ সময় নান্নু, তার ছাট ভাই সানু ও চাচাত ভাই কামাল মিয়া রামিন ও মুরসালিনকে মারধর করে। এ সময় তাদের রক্ষা করার জন্য ব্যাপারীপাড়া গ্রামের কিরণ মিয়াসহ ১০/১২ জন লোক এগিয়ে আসলে তারাও মারধরের শিকার হন। নান্নু মিয়া উপজেলা সদরের মালিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনার জের ধরে উভয় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলী আরশাদ, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর হোসেন, শাহাদত্ হোসেন, জহির মিয়া ও আবদুল মান্নানসহ উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে কিরণ মিয়াকে রাত দেড়টায় ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান। সংঘর্ষের সময় নান্নু মিয়ার দোকান, একতা ও বিছমিল্লাহ মত্স্য আড়তসহ ৮-১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট করে দাঙ্গাবাজরা। আহতদের মধ্যে মালিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানসহ ২৫ জনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সরাইল থানার ওসি মো. আলী আরশাদ জানান, পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর