সোমবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

ওয়ান-ইলেভেনের বিষয়ে তদন্ত কমিশন গঠনে প্রস্তাব সংসদে

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদে ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবদের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ ও তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা। গতকাল রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ দাবি জানান। প্রথমে বেসরকারি বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, এক-এগারোর কুশীলবদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমও একই দাবি করে বলেন, এক-এগারোর কুশীলবদের বিচার হওয়া উচিত। দ্রুত একটি কমিশন গঠন করে এদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের প্রসঙ্গে মেনন বলেন, এই সম্পাদকের স্বীকারোক্তি থেকে আমরা বুঝতে পারি কীভাবে ১/১১-তে রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনন করা হয়েছে। সে সময় এক-এগারোর নির্যাতনের শিকার রাজনীতিকরা এই সংসদেই সেই কুশীলবদের বিচার দাবি করেছেন। অবিলম্বে এক-এগারোর কুশীলবদের বিচারে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানান। মেনন বলেন, জামায়াতে ইসলামী এখনো যে অপরাধ করছে তাতে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। একইভাবে বিএনপি জামায়াতকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যেভাবে রাজনীতি করার সুযোগ দিচ্ছে তাতে বিএনপির রাজনীতিও প্রশ্নবিদ্ধ। জামায়াতের নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে এবং সেসময় যে ষড়যন্ত্র করেছেন এবং পরে তারা যে ভুল করেছেন তার খেসারত কেন জনগণ দেবে? গত পৌর নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে রাশেদ খান মেনন বলেন, আমার দলের অনেক প্রার্থীর ওপরও অন্যায় করা হয়েছে। কমিশনকে আমরা জানিয়েছি। কিন্তু কমিশন তা কানে দেয়নি। ওই নির্বাচনে মানুষ ইসির কারণে অনেকটা আস্থা সংকটে ভুগছে। এবার ইউনিয়ন নির্বাচনে যেন ইসি কোনো পক্ষপাতিত্ব না করে। এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে তা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হবে। এক-এগারোর রহস্য উন্মোচনের দাবি জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, এক-এগারো ছিল একটা বড় ধরনের ষড়যন্ত্র। ষড়যন্ত্রকারীরা রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনন করেছিল, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের পরিস্থতি সৃষ্টি না হয়, সেজন্য একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা দরকার। এক-এগারোর কুশীলবদের বিচার হওয়া উচিত। দ্রুত একটি কমিশন গঠন করে তিনি এদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। কোনো দেশের কাছ থেকে আমরা গণতন্ত্রের ফরমুলা শিখতে চাই না। আমরা কাদের কাছ থেকে গণতন্ত্র শিখব? যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়েছে তাদের কাছ থেকে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। কোনো অন্তর্বর্তী নির্বাচন নয়, ২০১৯ সালে নির্বাচন হবে। তার আগে কোনো মতেই নয়। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসা মানে হাওয়া ভবন থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করা। জনগণ আজ বুঝেছেন, বিএনপিকে ভোট দিলে উন্নয়নের গতি বন্ধ হয়ে যাবে। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু মাহফুজ আনামের সমালোচনা করে বলেন, ভুল স্বীকার করলেই দোষ খণ্ডায় না। তিনি তার ভুল স্বীকার করলেন, কিন্তু তার পরে সম্পাদকরা তার পক্ষে বিবৃতি দিলেন। সম্পাদকদের যেমন আমাদের সমালোচনা করার অধিকার রয়েছে, তেমনি আমাদেরও (এমপি) অধিকার রয়েছে তাদের সমালোচনা করার। এতে গণমাধ্যমের অধিকার খর্ব করা হয় না। স্বাধীনতা ধ্বংস করা হয় না। বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি এখন ইতিহাসের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খালেদা জিয়া এখন জঞ্জাল আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছেন। তারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, কাদের হাতে গণতন্ত্র দেব, আগুন সন্ত্রাসীদের হাতে, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল তাদের হাতে, জামায়াত-শিবিরের হাতে? এদের কোনো ছাড় নয়। এ দেশের মাটিতে এদের বিচার হবে।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আরও অংশ নেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, জাহিদ আহসান রাসেল, তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর