শুক্রবার, ১ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

দ্বিতীয় ধাপেও আওয়ামী লীগের জয়জয়কার

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জয়জয়কার। নানা অনিয়ম ও সহিংসতার মধ্য দিয়ে গতকাল দেশের ৬৩৯টি ইউপিতে একযোগে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। গত রাত ২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৬৩৯ ইউপির মধ্যে ৬২৯টির বেসরকারি ফলাফল পাওয়া গেছে। এতে আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ৪৫০টিতে। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী জয় পেয়েছে ৪১টিতে। এছাড়া বিএনপি বিজয়ী হয়েছে ৫৯টিতে। জাসদ ২টিতে, জাতীয় পার্টি ১টিতে এবং স্বতন্ত্র ব্যানারে বিজয়ী হয়েছেন ৭৬ জন। এর মধ্যে জামায়াতের তিনজন রয়েছেন। এর আগে ৩৩ ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। ভোট গণনাকালেও বেশ কয়েকটি ইউপিতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়াও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে চেয়াররম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন জাতীয় পার্টি, জাসদসহ মোট ১৭টি দলের প্রার্থীরা। স্বতন্ত্রের ব্যানারে অংশ নেয় জামায়াতে ইসলামীও। অবশ্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিদ্রোহীরাও স্বতন্ত্র ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেন। ঢাকা বিভাগ : ১৫৮ ইউপির মধ্যে ১৩৮টির প্রাপ্ত ফলাফলে বিদ্রোহীসহ আওয়ামী লীগ ১২৩, বিএনপি ১০ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতেছেন ৫টিতে। রংপুর বিভাগ : গত রাত ১টা পর্যন্ত সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে রংপুর বিভাগের ৭৯ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগ ৫৩, বিএনপি ৬ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ২০টিতে জয়লাভ করেছেন। রংপুর জেলার ১১ ইউপির ১০টিতেই আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে। একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। পঞ্চগড়ে ৬ ইউপির ৩টিতে আওয়ামী লীগ, ৩টিতে স্বতন্ত্র (আওয়ামী বিদ্রোহী) জয়ী হয়েছেন। নীলফামারীতে পাঁচ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩, স্বতন্ত্র ২টিতে জয়লাভ করেছে। ঠাকুরগাঁওয়ে ৭টিতে আওয়ামী লীগ, ৩টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। লালমনিরহাটে ১২ ইউনিয়নের ৯টিতে আওয়ামী লীগ, ৩টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। দিনাজপুরে ৩৫ ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২১, বিএনপি ৬ ও স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ৪ জনসহ) প্রার্থী ৮টিতে বিজয়ী হয়েছেন।

চট্টগ্রাম বিভাগ : কক্সবাজার : কক্সবাজারের পেকুয়ায় ৭ ইউপিতে বিদ্রোহীসহ আওয়ামী লীগ ৩, বিএনপি ৩ ও ১টি ইউপিতে জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া : নবীনগর উপজেলার ১১ ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৯ ও দলটির বিদ্রোহী ২ জন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। কুমিল্লা : বরুড়া ও সদর দক্ষিণ উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের মধ্যে ১৩টির ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টিতে বিএনপি ও ৮টিতে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়েছে। এ নির্বাচনে জাল ভোট ও সহিংসতার কারণে বরুড়ার চিতড্ডা ইউপির ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে। নোয়াখালী : ১৫ ইউপির ১১টিতে আওয়ামী লীগ ও ৩টিতে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে কবিরহাটের ৭ ইউপির ৪টিতে আওয়ামী লীগের ও ৩টিতে তাদের বিদ্রোহী বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া কোম্পানীগঞ্জের ৮ ইউপির ৭টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন এবং ১টির ফলাফল স্থগিত রয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা : সন্দ্বীপের ১২ ইউপির ১১টিতে আওয়ামী লীগ ও ১টিতে জাতীয় পার্টি জয়লাভ করেছে। এ ছাড়া সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই উপজেলার ১৮ ইউপিতে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে। সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম জেলার ৩০ ইউপির মধ্যে ২৯টিতে আওয়ামী লীগ ও ১টিতে জাতীয় পার্টি বিজয়ী হয়েছে। চাঁদপুর : চাঁদপুরের ১৮ ইউপির ১৪টিতেই জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ, ৩টিতে বিএনপি। ১টি ইউপির ফলাফল স্থগিত রয়েছে। এর মধ্যে চাঁদপুর সদরের ১২ ইউপির ১০টিতে আওয়ামী লীগ, ২টিতে বিএনপি এবং হাইমচরের ৪টিতে আওয়ামী লীগ, ১টিতে বিএনপির প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। খুলনা বিভাগ : খুলনা বিভাগের ৬ জেলার মোট ৭১ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও গতকাল নির্বাচন হয়েছে ৬৭টিতে। এগুলোর চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ৫২, একই দলের বিদ্রোহী ৭, বিএনপি ১, জাসদ ২, জামায়াত ২ ও স্বতন্ত্র ১ জন বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচনী গোলযোগের কারণে যশোরের ২ ইউপির ফলাফল স্থগিত রয়েছে। যশোর সদর উপজেলার ১৫ ইউপির মধ্যে ঘোষিত ১৩ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ১২ ও বিএনপি ১টিতে বিজয়ী হয়েছে। মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ৪ ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগের ২ এবং তাদের বিদ্রোহী ২ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার ২০ ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগের ১৮ ও জাসদের ২ জন জয়ী হয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৪ ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগের ২ ও তাদের বিদ্রোহী ২ প্রার্থী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ১২ ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগের ৭, তাদের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) ৩ ও জামায়াতের (স্বতন্ত্র) ২ প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। মাগুরা সদর উপজেলার ১২ ইউনিয়নের মধ্যে ১১টিতে আওয়ামী লীগ ও ১টিতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সিলেট বিভাগ :হবিগঞ্জ : আজিমিরীগঞ্জ উপজেলার ৫ ইউপির ৩টিতে আওয়ামী লীগ ও ২টিতে তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। মৌলভীবাজার : জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগের ১০, বিএনপির ৪, আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী ১ জন বিজয়ী হয়েছেন।  সুনামগঞ্জ : ছাতক উপজেলার ১৩টির মধ্যে ৯টিতে আওয়ামী লীগ, ৩টিতে তাদের বিদ্রোহী ও ১টিতে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। সিলেট : কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের মধ্যে ৫টিতে আওয়ামী লীগ, ৫টিতে একই দলের বিদ্রোহী, ২টিতে বিএনপি ও ১টিতে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বরিশাল বিভাগ : ভোলা : ভোলা সদর, মনপুরা ও চরফ্যাশনের ১০ ইউপির ৯টিতে আওয়ামী লীগ, ১টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।  পটুয়াখালী : সদরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ময়মনসিংহ বিভাগ : জামালপুর : সদর ও মেলান্দহ উপজেলার ২৫ ইউপির ২১টিতে আওয়ামী লীগ, ২টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ১টিতে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। নেত্রকোনা : আটপাড়ার ৭ ইউপির মধ্যে ৬টিতে আওয়ামী লীগ ও ১টিতে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। শেরপুর : সদর, নকলা ও শ্রীবর্দী উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে ১২টিতে আওয়ামী লীগ, ২টিতে বিএনপি ও ২টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ময়মনসিংহ জেলা : গৌরীপুর ও তারাকান্দায় ২০ ইউপির ৯টিতে আওয়ামী লীগ, ৮টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও ১টিতে বিএনপি প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। রাজশাহী বিভাগ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ : গোমস্তাপুর উপজেলার ৮ ইউনিয়নের ৬টিতে আওয়ামী লীগ, ১টিতে বিএনপি ও ১টিতে জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নওগাঁ : দুই উপজেলার ১৯টি ইউনিয়নের ১৪টিতে আওয়ামী লীগ, ১টিতে বিএনপি ও ২টিতে বিএনপির বিদ্রোহী এবং ৩টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে ধামইরহাট উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ৬টিতে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ, ১টিতে বিএনপি ও ১টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। পত্নীতলার ১১ ইউনিয়নের ৮টিতে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ, ১টিতে বিএনপির বিদ্রোহী ও ২টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী। নাটোর : নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৮টির ফলাফল আমাদের হাতে এসেছে। এর মধ্যে ৮টি ইউনিয়ন পরিষদেই বিজয়ী হয়েছেন আওয়ালীগের প্রার্থীরা। এ ছাড়া বাগাতিপাড়া উপজেলার পাকা ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. আমজাদ হোসেন বেঙ্গা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। বগুড়া : বগুড়া জেলার দুটি উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে শিবগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের ৪ জন, বিএনপির ২ জন ও ৫ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এখানে মোকামতলার ইউনিয়ন পরিষদ ও সোনাতলা উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পরিষদের ফলাফল পাওয়া যায়নি। পাবনা : পাবনা জেলার ২টি উপজেলার ১০ ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ভাঙ্গুরার ৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৩টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ও একটিতে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। ফরিদপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন পরিষদের ফলাফল পাওয়া যায়নি। সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জ জেলার একটি উপজেলার ১০ ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৮টিতে নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ৫টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ও দুটিতে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। কাওলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের একটি নির্বাচনী কেন্দ্রে গণ্ডগোল হওয়ায় নির্বাচনী ফলাফল স্থগিত রয়েছে। সয়দাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনও স্থগিত রয়েছে। এ ছাড়া রতনকান্দি ইউনিয়ন পরিষদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় সেখানে মেম্বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। টাঙ্গাইল : জেলার গোপালপুর ও ভূঞাপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ১০টি, আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী ২টি ও বিএনপি ১টি ইউনিয়নে জয় লাভ করেছে। মানিকগঞ্জ : জেলার দৌলতপুর উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ১, বিএনপি ১ ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ৬টি ইউপিতে জয়লাভ করেছে।

সর্বশেষ খবর