শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

শনাক্ত হয়নি নাজিমের খুনিরা, ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে ব্লগার নাজিমুদ্দিন খুনের ঘটনায় কেউ শনাক্ত হয়নি। ব্যস্ততম একটি সড়কে সবার সামনে অজ্ঞাত চার-পাঁচ যুবক কুপিয়ে ও গুলি করে তাকে হত্যা করে। কিন্তু কারা, কী কারণে তাকে হত্যা করল সে বিষয়ে এখনো জানতে পারেনি পুলিশ। কিন্তু এ ঘটনায় নাজিমের বন্ধু সোহেল আহমেদসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনায় সূত্রাপুর থানার এসআই নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, নাজিম ক্লাস শেষ করে তার বন্ধু সোহেলের সঙ্গে পায়ে হেঁটে গেণ্ডারিয়ার বাসায় ফিরছিলেন। পথে একরামপুর মোড়ে নাজিমকে অতর্কিত চাপাতি দিয়ে একটি কোপ দেয় দুর্বৃত্তরা। নাজিম আত্মরক্ষার চেষ্টায় দৌড় দিয়ে সুবর্ণ টেইলার্সের সামনে গিয়ে পড়ে যান। এ সময় তাকে ধরে মাথায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গুলি করে ঠাণ্ডা মাথায় চলে যায় দুর্বৃত্তরা। কর্মকর্তারা বলছেন, একরামপুর মোড়ে তিন দিকে যাওয়ার রাস্তা থাকায় দুর্বৃত্তরা ওই স্থানটি বেছে নেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনলাইনে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লেখালেখি করতেন নাজিম। তিনি সিলেটে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ছিলেন। হেফাজতের আন্দোলনের সময় ‘নাস্তিক ব্লগারদের’ যে কথিত তালিকা কয়েকটি গণমাধ্যমে এসেছিল, তাতে তার নামও ছিল। ঘটনাটি পরিকল্পিত এবং খুনিরা পেশাদার। এসব হত্যাকাণ্ড জঙ্গিদের কাজ বলে তারা সন্দেহ করছেন। গতকাল বেলা ১১টায় সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার তিলাপাড়া ইউনিয়নের টুকা ভরাউট নিজ গ্রামের জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে সকালে ঢাকা থেকে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে হূদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। আত্মীয়স্বজন ও নাজিমের পরিচিতজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। গতকাল দুপুরে একরামপুর মোড়ের সুবর্ণা টেইলার্স বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে রক্তের ছাপ এখনো রয়েছে। কয়েকটি দোকান খুললেও তাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। আশপাশে বড় বড় ভবন থাকলেও তাতে সিসি ক্যামেরা দেখা যায়নি। পুলিশ বলছে, যেসব ভবনের সিসি ক্যামেরা পাওয়া যাবে, তার ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখা হবে। এ ছাড়া তার মোবাইল কললিস্ট যাচাই করা হচ্ছে। সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তপনচন্দ্র সাহা বলেন, নাজিম হত্যায় অনেক বিষয় সামনে আসছে। প্রতিটি বিষয়ই গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নাজিমের বন্ধু সোহেলসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ধরন দেখে মনে হয়েছে খুনিরা প্রশিক্ষিত ও পেশাদার। পরিকল্পিতভাবেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। কারা, কী কারণে হত্যা করেছে তা শনাক্তের চেষ্টা চলছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। বুধবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র ও ব্লগার নাজিমুদ্দিনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নাজিম জবির সান্ধ্যকালীন এলএলএম কোর্সের ষষ্ঠ ব্যাচের বি সেকশনের ছাত্র ছিলেন।

সর্বশেষ খবর