স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ইউপি নির্বাচন শুধু প্রশ্নবিদ্ধই নয়, গুলিবিদ্ধও। চলমান নির্বাচনে অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে এ মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ইউপি নির্বাচনে এ পর্যন্ত প্রাণনাশের হাফ সেঞ্চুরি হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় চার হাজার মানুষ। তাই এ নির্বাচন শুধু প্রশ্নবিদ্ধই নয়, গুলিবিদ্ধও। এ ছাড়া নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ওয়ান অ্যান্ড হাফ। কাজেই স্থানীয় নির্বাচন কোন দিকে যাচ্ছে, এমন প্রশ্ন তোলেন তিনি। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন এই স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ। ‘চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন : প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন ও স্থানীয় শাসনব্যবস্থা’ শীর্ষক এ মতবিনিময় সভা যৌথভাবে আয়োজন করে গভর্ন্যান্স অ্যাডভোকেসি ফোরাম ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। গভর্ন্যান্স অ্যাডভোকেসি ফোরামের সমন্বয়ক মহসিন আলীর পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক এম এম আকাশ, ব্রতীর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার শারমীন মুরশিদ, কাজী মারুফুল ইসলাম, ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের পরিচালক আবদুল আলিম, স্টেপসের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার প্রমুখ। ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমরা তো বলনেওয়ালা। যারা দেখনেওয়ালা, শোনাওয়ালা অর্থা?ৎ যারা শুনবেন, দেখবেন, তারা কিছু করছেন না। জাতীয় নির্বাচন যেমনই হোক আগে ইউপি নির্বাচন ছিল উৎসবমুখর। কিন্তু এবার তা নেই।’ তিনি বলেন, ‘বোবার কোনো শত্রু নেই। কিন্তু বুঝে-শুনে যারা বোবা হন, তারা বোবা শয়তান। তাই যারা বুঝে-শুনে বোবা, তারা বেইমান। কিন্তু আমরা এখন বোবা শয়তান হয়ে গেছি।’ তবে এজন্য কেবল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সমালোচনা করলে হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইসির অনেক শক্তি আছে। কিন্তু তা ব্যবহারের নজির নেই। আর তা ইসি চাইলেও পারবে না, যদি সরকার সহায়তা না করে। তাই ইসি যতই শক্তিশালী হোক, সরকার সহায়তা না করলে ভালো নির্বাচন করতে পারবে না। তাই সরকার না চাইলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। এজন্য শুধু ইসিকে বললে হবে না, সরকারকেও বলতে হবে।

অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, গত তিন ধাপের ইউপি নির্বাচনে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিধিমালার কোনো বিধিই পালন করা হয়নি। বিধিতে পেশিশক্তি, সন্ত্রাসের অনুমতি না থাকলেও তা বন্ধ করতে পারেনি ইসি। ভোট কেন্দ্রে যারা প্রবেশ করতে পারেন, তাদের বাইরেও অনেকে ঢুকেছেন, তাও বন্ধ করতে পারেনি। তাই ইসিকে বিধিমালা প্রতিপালন করতে হবে।

শারমীন মুরশিদ বলেন, কোন কোন কারণে নির্বাচনব্যবস্থার উন্নতি হয়েছিল, তা ভাবতে হবে। আবার কোন কোন কারণে তা খারাপ হয়েছে, তা নিয়েও ভাবতে হবে। সরকার কথাগুলো শুনবে বলে আশা তার। শারমীন মুরশিদ অভিযোগ করেন, এখন নির্বাচনে প্রকাশ্যেই অনিয়ম হয়। অনিয়মের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না।