শিরোনাম
শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

হঠাৎ বিক্রি বেড়েছে সিসি ক্যামেরার

আতঙ্কে মানুষ ঘর বাড়ি অফিস আদালতের জন্য কিনছেন

মির্জা মেহেদী তমাল

হঠাৎ বিক্রি বেড়েছে সিসি ক্যামেরার

সিরিজ খুনের ঘটনার পর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এখন সাধারণ মানুষ। জান-মাল নিরাপদ রাখতে তারা এখন ছুটছে নিরাপত্তা সামগ্রী সংগ্রহে। বিশেষ করে ‘পুলিশ ঘরে ঘরে পাহারা দিতে পারবে না, নিজেদেরও নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে’ পুলিশ প্রধানের এমন বক্তব্যের পর ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানোর প্রবণতা  বেড়েছে। নিরাপত্তা বাড়ানোর এই প্রবণতা রাজধানীসহ এখন সারা দেশেই। অফিস-আদালত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, শপিংমল, দোকান ও বাসা-বাড়িতে  ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ব্যবহার বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। এ কারণে হঠাৎ সিসি ক্যামেরা বিক্রির ধুম পড়েছে। নিরাপত্তা পণ্যের দোকানগুলোতে প্রতিদিনই এখন ভীষণ ভিড়। ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতেও যাচ্ছে প্রচুর সংখ্যক সিসি ক্যামেরা।

জানা গেছে, রাজধানীর বায়তুল মোকাররম, স্টেডিয়াম মার্কেট ও এলিফ্যান্ট রোডের মার্কেটগুলোতে বিক্রি হয় সিসি ক্যামেরা। চাহিদা বাড়ায় এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি আমদানি ও বিক্রি করছেন দোকানিরা। ধরন ও আকারের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন দামে পাওয়া যাচ্ছে সিসি ক্যামেরা। ন্যূনতম ১৫ হাজার টাকা খরচ করে এই ক্যামেরা স্থাপন করা যায় বলে জানা গেছে। বাজারে অ্যানালগ, এইচডি, নাইট ভিশনসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যামেরা পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া, ইন্টারনেটের মাধ্যমে  যে কোনো স্থান থেকে মনিটরিং সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে এসব সিসি ক্যামেরায়। এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান সেন্টারের ‘লজিক গো’ দোকানের কর্ণধার তরিকুল ইসলাম তুষার গতকাল বলেন, নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরার চাহিদা আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি বেড়েছে। গত সোমবার কলাবাগানে জোড়া খুনের ঘটনার পর সিসি ক্যামেরা বিক্রি বেড়েছে তিনগুণ বেশি। এ ছাড়া বিগত ছয় মাস ধরে বাসা-বাড়িতেও ক্যামেরা লাগানোর হার বেড়েছে। চাহিদা বাড়ায় আমদানিও বেশি হচ্ছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হলেও চীনের তৈরি সিসি ক্যামেরার দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় বিক্রি হচ্ছে বেশি। প্রতিদিন গড়ে ১০ সেট সিসি ক্যামেরা বিক্রি হয়। ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন  জেলা থেকেও অনেকে সিসি ক্যামেরা কিনতে আসেন। রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে স্টেডিয়াম মার্কেটে সিসি ক্যামেরা কিনতে আসা রহিম তফাদার বলেন, পরিস্থিতি  দেখছি অবনতি। বাসা-বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়ছে সন্ত্রাসীরা। বেডরুমও নিরাপদ থাকছে না। বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ে সন্ত্রাসীরা। সিসি ক্যামেরা থাকলে দেখে-শুনে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। বাড়তি খরচ হলেও নিরাপত্তার জন্য এ ছাড়া উপায় নেই। গত সোমবার বিকালে রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাসে নিজের বাসায় খুন হন ইউএসএআইডির কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বি তনয়। এরপর লেক সার্কাসের ডলফিন গলি দিয়ে পালিয়ে যায় ঘাতকরা। তাদের পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধারণ হয় পাশের বাড়ির সিসি ক্যামেরায়। এ ছাড়া, ডাকাতি ও খুনসহ বিভিন্ন ঘটনায় অপরাধীদের শনাক্ত করতে ঘটনাস্থল বা ঘটনাস্থলের আশপাশের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজের সহায়তা নেয় পুলিশ। অনেক ক্ষেত্রে এসব ফুটেজ দেখেই অপরাধীদের শনাক্ত করতেও সক্ষম হচ্ছে প্রশাসন।

সর্বশেষ খবর