বুধবার, ৪ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

কাল নিজামীর কী হবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

কাল নিজামীর কী হবে?

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদনের ওপরে আগামীকাল বৃহস্পতিবার রায় দেবেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। গতকাল উভয় পক্ষের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ আদেশের জন্য এ দিন ধার্য করেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও আসামিপক্ষে অংশ নেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। রিভিউ আবেদনের রায় যে কোনো মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার সর্বশেষ ধাপ। এখানে যদি ফাঁসির রায় বহাল থাকে তবে রাষ্ট্রপতির কাছে নিজামীর প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ থাকবে। গত ১০ এপ্রিল আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করলে আপিল বিভাগ ৩ মে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। এর আগে ৩০ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ নিজামীর রিভিউ আবেদন দ্রুত শুনানির জন্য দিন নির্ধারণের আবেদন করে। পরে বিষয়টি চেম্বার আদালত হয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে যায়। ২৯ মার্চ মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেন নিজামী। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মতিউর রহমান নিজামীকে গত ৬ জানুয়ারি ফাঁসির আদেশ দেন আপিল বিভাগ। ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ওই রাতেই পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি কারাগারে পৌঁছায়। ১৬ মার্চ কাশিমপুর কারাগারে নিজামীকে রায় জানানো হয়। শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকবে বলে আশা করছি। আমরা আদালতে বলেছি, একাত্তরে নিজামীর বক্তব্য ছিল প্ররোচনামূলক। সাক্ষীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যখন একজন ডাক্তারকে ধরে নেওয়া হয়, এ সময় তার স্ত্রীকে আলবদররা বলেছিল, মতিউর রহমান নিজামীর নির্দেশে তারা তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে তাকে আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। মাহবুবে আলম বলেন, মৃত্যুদণ্ড সঠিক হয়েছে। সেটা পুনর্বিবেচনার কোনো প্রয়োজন নেই এবং কোনো অবকাশ নেই। তা ছাড়া পুনর্বিবেচনা যে প্রয়োজন, এ মর্মে কোনো যুক্তি তারা উপস্থাপন করতে পারেননি। তাই আমি মৃত্যুদণ্ড বহাল চেয়েছি। অন্যদিকে খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ন্যায়বিচার আশা করি। এরপর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও ইতিহাস বিচার করবে, এ বিচার সঠিক ছিল কিনা। তিনি বলেন, শুনানিতে তিনটি অভিযোগের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছি। যে তিনটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি যে, তিনটি অভিযোগের পক্ষে যে সাক্ষ্য-প্রমাণ প্রসিকিউশন থেকে দেওয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত দুর্বল এবং এ সাক্ষ্য-প্রমাণের ওপরে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যায় না। বিশেষ করে বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম ও আজহারের স্ত্রীর যে বক্তব্য (নিজামীর নির্দেশে ধরে নেওয়া), এ কথাটি তারা দীর্ঘ ৪০ বছরে বলেননি। এমনকি তদন্ত কর্মকর্তাকেও বলেননি। হঠাৎ করে শেখানো কথা বলা হয়েছে। এর ওপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ দণ্ড দেওয়া যায় না।

সর্বশেষ খবর