বুধবার, ৪ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

চার রাজাকারের মৃত্যুদণ্ড একজনের আমৃত্যু জেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কিশোরগঞ্জের শামসুদ্দিন আহমেদসহ চার রাজাকারকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ২৩তম মামলার রায়। এ মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে ফাঁসির আসামি কিশোরগঞ্জের আইনজীবী শামসুদ্দিন আহমেদই কেবল আটক রয়েছেন। তাকে রায়ের সময় কাঠগড়ায় উপস্থিত করা হয়। শামসুদ্দিনের ভাই সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মো. নাসিরউদ্দিন আহমেদ, স্থানীয় রাজাকার কমান্ডার গাজী আবদুল মান্নান, আজহারুল ইসলাম ও হাফিজউদ্দিন মামলার শুরু থেকেই পলাতক। এদের মধ্যে আজহারুলকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং অন্যদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একাত্তরে এ পাঁচ আসামি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর সহযোগিতায় গঠিত রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। সরকার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বা গুলি করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের রায় কার্যকর করতে পারবে বলে রায়ে বলা হয়েছে। রায় ঘোষণার পর আদালতে উপস্থিত একমাত্র আসামি শামসুদ্দিন বলেন, ফলস উইটনেস, ফলস জাজমেন্ট। বানানো সাক্ষীর বিচার। এ মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ ও রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামি শামসুদ্দিনের পক্ষে আইনজীবী মাসুদ রানা। পলাতক অন্য চারজনের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আবদুস শুকুর খান শুনানিতে অংশ নেন।

 

মামলার প্রথম অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ১২ নভেম্বর কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার বিদ্যানগর ও আয়লা গ্রামের মোট আটজনকে হত্যা ও একজনকে আহত করা। এ অভিযোগে শামসুদ্দিন, মান্নান ও নাসিরউদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য দুজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় অভিযোগ : ১৩ নভেম্বর আয়লা গ্রামের মিয়া হোসেনকে হত্যা। এ অভিযোগে একমাত্র আসামি নাসিরউদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় অভিযোগ : একই উপজেলার মো. আবদুল গফুরকে অপহরণ করে ২৬ সেপ্টেম্বর খুদির জঙ্গল ব্রিজে নিয়ে হত্যা। এ অভিযোগে হাফিজকে মৃত্যুদণ্ড, মান্নানকে খালাস এবং অন্য তিনজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। চতুর্থ অভিযোগ : ২৩ আগস্ট করিমগঞ্জ উপজেলা ডাকবাংলোতে মো. ফজলুর রহমান মাস্টারকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যা। পাঁচ আসামির সবাইকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পঞ্চম অভিযোগ : ৭ সেপ্টেম্বর রামনগর গ্রামের পরেশ চন্দ্র সরকারকে হত্যা। এ অভিযোগে একমাত্র আসামি শামসুদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ষষ্ঠ অভিযোগ : ২৫ আগস্ট পূর্ব নবাইদ কালিপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক ও রূপালীকে অপহরণ করে নির্যাতন ও হত্যা। এ অভিযোগে একমাত্র আসামি মান্নানকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সপ্তম অভিযোগ : ১৫ সেপ্টেম্বর আতকাপাড়া গ্রামে আক্রমণ করে ২০-২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ। এ অভিযোগে একমাত্র আসামি মান্নানকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর