যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির পর বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনারকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। গতকাল বিকালে ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার সুজা আলম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হাজির হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপক্ষীয়) মো. মিজানুর রহমান বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানান এবং তার হাতে প্রতিবাদপত্র তুলে দেন। পরে মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে ডেকে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, তাদের বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য।’ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পর শুক্রবার এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে এবং ত্রিপক্ষীয় চুক্তির অপব্যাখ্যা দেওয়া বন্ধ করার আহ্বান জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। গতকাল আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদপত্র দেওয়া হলো। অবশ্য পাকিস্তানের এ ধরনের আচরণ নতুন নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দণ্ডকে ঘিরে ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ছয়বার বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে এবং জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে প্রস্তাব এনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। গত বছরের নভেম্বরে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রথমবারের মতো বিবৃতি দেয়। পাকিস্তানের এমন অবস্থানের প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকায় দেশটির হাইকমিশনারকে কয়েক দফায় তলব করে এসব বক্তৃতা-বিবৃতি বন্ধ করার কথা বললেও তা কানে তুলছে না পাকিস্তান, বরং পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক পদক্ষেপে গেছে দেশটি।