বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা
৪৩ সংগঠনের সংবাদ সম্মেলন

ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা হচ্ছে

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

‘শিক্ষক শ্যামলকান্তি ভক্তের কান ধরে উঠবোস করার ঘটনায় ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে কিছু কিছু মিডিয়া। তারা প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ না করে একপেশে সংবাদ পরিবেশন করছে।’ গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সেলিম ওসমান এমপির পক্ষে ৪৩ সংগঠনের (৮টি জাতীয় ও ৩৫টি জেলাভিত্তিক) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোহাম্মদ আলী, গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি আসলাম সানি, এফবিসিসিআইর পরিচালক ও বাংলাদেশ ক্লথ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রবীরকুমার সাহা, বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল আলম সজল, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি মঞ্জুরুল হক, আবদুস সোবহান প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ব্যবসায়ীরা জানান, বন্দরের পিয়ার সাত্তার লতিফ স্কুলে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তিকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত ঘটনা একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়কে এতটাই অশান্ত করে তুলেছিল যে, ওই এলাকার মানুষ জুমার নামাজ আদায় না করেই বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রধান শিক্ষকের শাস্তি দাবিতে অবস্থান করছিলেন। মানবতার স্বার্থে সেলিম ওসমান এমপি অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষক শ্যামলকান্তিকে জনরোষের হাত থেকে রক্ষার জন্য নিজের অসুস্থ শরীর সত্ত্বেও ওখানে গিয়েছিলেন। প্রধান শিক্ষক তার জীবন বাঁচাতে এমপির কাছে আবেদন জানান এবং তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকার করে নেন। তখন শ্যামলের সম্মতি অনুযায়ী এমপি যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন তা দৃষ্টিকটু ও দুঃখজনক হলেও ও রকম পরিস্থিতিতে অন্য কোনো পথ খোলা ছিল না। ‘একজন মানুষকে রক্ষা করার জন্য সেলিম ওসমান ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য নাকি তিরস্কার পাওয়ার?’— ব্যবসায়ীরা সাংবাদিকদের এই প্রশ্ন করেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে পিয়ার সাত্তার স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র রিফাত হোসেন ও তার মা রিনা বেগমের বক্তব্যের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। এতে দেখা যায় ইসলাম ধর্ম নিয়ে প্রধান শিক্ষক শ্যামলকান্তি ভক্ত কটূক্তি করেছেন মর্মে রিফাত ও তার মা রিনা বেগম অভিযোগ করছেন। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রকৃত সত্য হলো, সেদিন এমপি ঘটনাস্থলে আসেন বিকাল ৪টায়। মূল ঘটনার শুরু বেলা ১১টায়। এই সময়ের মধ্যে উত্তেজিত ৩-৪ হাজার মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছিল। পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হতে থাকলে এমপিকে খবর দেওয়া হয়। কারণ, ইতিমধ্যে বিক্ষুব্ধ জনতা প্রধান শিক্ষককে কয়েক দফা এলোপাতাড়ি মারধর করে তার শার্ট-প্যান্ট ছিঁড়ে ফেলেছিল। কোনো কিছুতেই পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা যাচ্ছিল না। তাই ঘটনাস্থলে উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এমপিকে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেন, সেলিম ওসমান এমপি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে শ্যামলকান্তিকে বাইরে নিয়ে গিয়ে জনতার উদ্দেশে বলেন, ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কটূক্তি করার জন্য প্রধান শিক্ষক আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করবেন। তিনি নিজেই নিজের শাস্তি গ্রহণ করবেন। এরপরই প্রধান শিক্ষক মহোদয় তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে কান ধরে উঠবোস করেন। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান সেলিম ওসমান এমপি। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। আমরা চাই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসুক। আমাদের বিশ্বাস প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবেই। যেহেতু তদন্ত চলছে তাই আমাদের অনুরোধ অভিযোগ, প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত বিকেএমইএ ও এনসিসিআই সভাপতি সেলিম ওসমান এমপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার যেন চালানো না হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর