বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

আত্মসমর্পণের নির্দেশ খালেদা জিয়াকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আত্মসমর্পণের নির্দেশ খালেদা জিয়াকে

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা সচলে দেওয়া হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। এ মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী আগামী দুই মাসের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণার পর গতকাল সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।

কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ ও বিচারিক আদালতে মামলাটির কার্যক্রম বৈধ বলে বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান এবং বিচারপতি আবদুর রবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলার রায় দেন। খালেদা জিয়ার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্ন আদালতে চলমান এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্ট রুল জারি করেছিলেন। শুনানির পর রুল খারিজ করে হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রমে দেওয়া স্থগিতাদেশ তুলে নেয়। এর ফলে মামলাটি আবার সচল হয়। গতকাল সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, রায়ে বলা হয়েছে, পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে আসামিকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বর্তমান সরকার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা চলমান রেখে রাজনীতি করতে চাচ্ছে। আমরা মনে করি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলা চলতে পারে না। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করা হবে। মামলাটির মোট আসামি ১১ জন। খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য ১০ আসামি হলেন— সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক এবং এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী, সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন। আসামিদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আবদুল মান্নান ভূঁইয়া ও এম শামসুল ইসলাম মারা গেছেন। আর ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধে মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ থানায় দুদক এ মামলাটি দায়ের করে। মামলায় ওই বছরের ৫ অক্টোবর আদালতে ১৬ জনের বিরুদ্ধে দুদক অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সে বছরের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে। একই সঙ্গে মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। এরপর বেশ কয়েক দফায় স্থগিতাদেশ বাড়ানো হয়। কয়েক বছর স্থগিত থাকার পর গত বছর দুদক এ মামলার রুল শুনানির উদ্যোগ নেয়।

সর্বশেষ খবর