রবিবার, ২৯ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

সিঙ্গাপুরে ‘লা-মাযহাব’ ব্যানারে সংগঠিত হচ্ছে এবিটি

ফাঁদে পড়ছেন সহজ-সরল শ্রমিক

সাখাওয়াত কাওসার

সিঙ্গাপুরে ‘লা-মাযহাব’ ব্যানারে সংগঠিত হচ্ছে এবিটি

সিঙ্গাপুরে ‘লা-মাযহাব’-এর ব্যানারে সংগঠিত হচ্ছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্যরা। টার্গেট সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত বাংলাদেশি শ্রমিক। মূলত এবিটির আধ্যাত্মিক নেতা মুফতি জসীম উদ্দীন রাহমানিকে গ্রেফতারে ক্ষুব্ধ হয়ে সংগঠনকে ‘শক্ত’ করার উদ্দেশ্যে তারা দেশীয় শ্রমিকদের মগজ ধোলাইয়ের কাজ করে যাচ্ছে। এসব শ্রমিকের কাছ থেকে আর্থিক অনুদান সংগ্রহ করে তারা সাংগঠনিক কাজের জন্য দেশে পাঠাচ্ছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবিটির সদস্যরা। সর্বশেষ সিঙ্গাপুর ফেরত গ্রেফতারকৃত পাঁচ শ্রমিককে কয়েক দফায় রিমান্ডে এনে এসব তথ্য আদায় করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিটি তথ্যই সিঙ্গাপুর পুলিশের সঙ্গে শেয়ার করা হচ্ছে। বিশেষ করে এ পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত এবিটির দুই সদস্যকে গ্রেফতারের জন্য ইতিমধ্যেই ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত শ্রমিকদের মগজ ধোলাইয়ের কাজে এই দুজন বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। ডিবির উপ-কমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গ্রেফতারকৃতরা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আধ্যাত্মিক নেতা জসীম উদ্দীন রাহমানির অনুসারী। তবে তারা রাহমানির অনুসারী হয়েছে সিঙ্গাপুরে থেকেই। সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত এবিটির কিছু শীর্ষ নেতা তাদের এ পথে নিয়ে এসেছে। তিনি আরও বলেন, এবিটির সদস্যরা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে এতিমখানাকে সহায়তা হিসেবে এবং বিভিন্ন অজুহাতে অর্থ সাহায্য নিচ্ছে। নানা রকম ফতোয়া দিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের বশীভূত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত তারা। তাদের গ্রেফতারের জন্য ইন্টারপোলের সাহায্য নেওয়া হবে। সূত্র আরও বলেছে, সরকারবিরোধী একটি চক্র সিঙ্গাপুরে এসব উগ্রপন্থিকে মদদ দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে ওই চক্রটি। দেশীয় শ্রমিকদের ইসলামের নামে বিভ্রান্ত করে তাদের টার্গেট পূরণে কাজে লাগানোর ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তারা। সর্বশেষ সিঙ্গাপুর ফেরত পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, গ্রেফতার পাঁচজন সিঙ্গাপুরে তাদের সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। আমরা যতদূর জানতে পেরেছি সিঙ্গাপুরেই তারা রেডিক্যালাইজড হয়েছে। আমার জানা মতে, শুধু বাংলাদেশের নাগরিকরা নয়, অন্যান্য দেশের নাগরিক এমনকি সিঙ্গাপুরের নাগরিকরাও রেডিক্যালাইজড হচ্ছে। চলতি মাসের শুরুতে রাজধানীর বনশ্রী এলাকা থেকে মিজানুর রহমান ওরফে গালিব হাসান (৩৮), রাহা মিয়া পাইলট (২৯), আলমগীর হোসেন (২৯), তানজীমুল ইসলাম (২৪) ও মাসুদ রানা ওরফে সল্লু খানকে (৩১) গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পরে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

সর্বশেষ খবর