রবিবার, ২৯ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

আমি এখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমি এখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি

ড. কামাল হোসেন

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, তিনি এখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করেন। তিনি গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘শ্রমিকদের জন্য কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় বক্তৃতা করছিলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজক : বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।

 সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল। আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক এম.এম আকাশ, শ্রমিকনেতা মোশরেফা মিশু, আবুল হোসাইন, তৌহিদুর রহমান প্রমুখ। ধনীক শ্রেণীর স্বার্থে বাজেট প্রণয়নের কঠোর সমালোচনা করে সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল বলেন, দুর্নীতি ও লুটপাট করে টাকার মালিক হওয়া লোকদের বঙ্গবন্ধু ‘ভুঁড়িওয়ালা’ বলতেন। তিনি ছিলেন শ্রমিক ও জনতার ভাগ্যোন্নয়নের পক্ষে। আমি তার সে আদর্শের রাজনীতি এখনো করি। ভুঁড়ি বৃদ্ধির বাজেটের জন্য ৭১ সালে রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করা হয়নি। এ জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি। অথচ বাজেটে এরাই সুবিধা পাচ্ছে। ড. কামাল বলেন, বাজেটের লক্ষ্য হওয়া দরকার সুবিধাবঞ্চিত নাগরিক সমাজকে সহযোগিতার মাধ্যমে মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এটা ছিল বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য। কিন্তু আজ শ্রমিকরা বঞ্চিত। স্বাধীন দেশে শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি পাবেন না, তা হতে পারে না। পঁয়তাল্লিশ বছর পর তাহলে কি আবার যুদ্ধ করতে হবে, রক্ত দিতে হবে?’ গণফোরাম সভাপতি আরও বলেন, শ্রমিকরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কখনো আত্মসমর্পণ করেননি। আজও অন্যায়ের প্রতিবাদের শক্তি শ্রমিকদের আছে। যদি শ্রমিকদের আত্মসমর্পণ করতে হয়, তাহলে বাংলাদেশের ইতিহাস মিথ্যে হয়ে যাবে। অধিকার আদায়ের জন্য পাড়া-মহল্লায় শ্রমিকদের লিফলেট বিতরণ করে সংগঠিত করার আহ্বান জানান তিনি। দুর্নীতি ও কালোটাকার মালিকদের সমালোচনা করে ড. কামাল বলেন, কালো টাকা ইবলিসের অস্ত্র। এ টাকা ভুঁড়িওয়ালারা বিদেশে জমাচ্ছেন, বাড়িও বানাচ্ছেন। এ টাকা দিয়ে মানুষ মারা হচ্ছে, গ্রেনেড মারা হচ্ছে, মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে। এদেরই একটি শ্রেণী আজ গণতন্ত্রসহ সব মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এরাই সব ধরনের অন্যায় কাজ করে যাচ্ছে। বাজেটেও এরাই সুবিধা পাচ্ছে। অধ্যাপক এম. এম আকাশ বলেন, গত ৩ বছরে ৭৬ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে, যা জিডিপির ৩%। শ্রমিক শ্রেণীর ভাগ্যের কোনো উন্নতি হয়নি। দেশে এখন মানি, মাসলম্যান আর ম্যানিপুলেশনের রাজনীতি চলছে। শ্রমিকদের রেশনিং ও আবাসনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন গার্মেন্টস রপ্তানি আয়ের মাত্র ৩ শতাংশ এ খাতে আদায় করা হলেই বছরে ৭০০ কোটি টাকা আয় হবে। যা দিয়ে শ্রমিকদের এসব সুবিধা দেওয়া যাবে। মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বলেন, ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত আগামী বাজেটে এদেশের ৫ কোটি ৮০ লাখ শ্রমিকের জন্য কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী-এমপি, সরকারি আমলাদের বেতন ১০১ ভাগ বৃদ্ধি করা হলেও শ্রমিকদের জন্য কোনো ঘোষণা নেই। তিনি গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ১৬ হাজার টাকা গড় মজুরির দাবি জানান।

সর্বশেষ খবর