সোমবার, ৩০ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

অর্থমন্ত্রীর কাছে রিহ্যাবের চার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন বাজেটে আবাসন খাতে বিনা প্রশ্নে অপ্রদর্শিত টাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে এ খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব। গতকাল সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে দেখা করে এ দাবি জানানো হয়। তবে অর্থমন্ত্রী এ দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, এটা হয় তো করা যাবে না। অন্য কোনো অপশন দিয়ে অপ্রদর্শিত টাকা সাদা করার সুযোগের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন তিনি। রিহ্যাবের প্রথম সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভুঁইয়ার নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধি দল অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনায় অংশ নেন। এ সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত সুপারিশমালায় রিহ্যাব বলেছে, আবাসন খাতের এখন ক্রান্তিকাল চলছে। এ খাতের বিকাশের জন্য শহর এলাকায় ৫ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডে এবং শহরের বাইরের জন্য ১০ বছরের ট্যাক্স হলিডে প্রচলন করার দাবি জানানো হয়। সরকারি ঘোষণা পূর্বক সিঙ্গেল ডিজিট সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের ব্যবস্থা করা। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের আবাসন সুবিধা দিতে ২০ হাজার কোটি টাকার একটি সিঙ্গেল ডিজিট সুদে রিফাইন্যান্সিং চালুর ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে রিহ্যাব। এতে আরও বলা হয়, ‘আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪’-এর ১৯-বি ধারার যুগোপযোগী করতে সংশোধনের প্রস্তাব করা প্রয়োজন। আবাসন খাতে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৫ থেকে ১০ বছরের জন্য গৃহায়ন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ ফ্ল্যাট, প্লট, বাণিজ্যিক ভবন ও বিপণিবিতানে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া উচিত। অন্যথায় বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাবে। এ ছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন দেশে ‘সেকেন্ড হোম’ গ্রহণের সুযোগ থাকায় দেশের অর্থ স্বাভাবিকভাবেই বিদেশে চলে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দিলে তা ট্যাক্স নেটের আওতায় আসবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। প্রাক-বাজেট আলোচনায় রিহ্যাব নেতারা ১৩ দফা দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে আবাসন খাতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সিঙ্গেল ডিজিট সুদে দীর্ঘমেয়াদি পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা চালু করা। রেজিস্ট্রেশন ব্যয় ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা। গেইন ট্যাক্স ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ নির্ধারণ। গৃহায়ন শিল্পের উদ্যোক্তাদের আয়কর হ্রাস করা। সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ সুদের হারে আবাসন তহবিল গঠন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া বিনা শুল্কে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি আমদানির সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান নেতারা। আবাসন শিল্পের জন্য বিদ্যমান ভ্যাট কমিয়ে ১ দশমিক শতাংশ নির্ধারণ। বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ভ্যাট আইন নিয়ে ব্যবসায়ীরা বিরোধিতা করছেন। এটা তারা করতেই পারেন। তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। কিন্তু আইনি বাস্তবায়ন করা ছাড়া কোনো পথ নেই। এই আইন বাস্তবায়ন হলে আগামী বছর সরকারের রাজস্ব আদায় প্রায় ৩০ শতাংশ বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।

সর্বশেষ খবর