শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনা এক অন্যরকম উচ্চতায়

আশরাফুল আলম খোকন, জাপান থেকে ফিরে

বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনা এক অন্যরকম উচ্চতায়

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো

বিশ্ব অর্থনীতিকে সংকটমুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে জাপানে শেষ হয়ে গেল জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন। যুক্তরাষ্ট্র, যুুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি এবং জাপানসহ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী বিশ্বের সাতটি দেশের ওই সম্মেলনে আমন্ত্রিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সম্মেলনে শেখ হাসিনা কেন আমন্ত্রিত হয়েছেন তা আশা করি যারা বিশ্ব অর্থনীতি সম্পর্কে একটু খোঁজখবর রাখেন তাদের বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। ‘জাপান— দ্য ইসে-শিমা সামিট’ শীর্ষক ১২২ পৃষ্ঠার বিশ্ব প্রকাশনায় যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্বের অন্বেষণে’ নিবন্ধটি বিশ্ব ভাবনা ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছিল তখনই বোঝা গিয়েছিল এ সম্মেলনে শেখ হাসিনার গুরুত্বের বিষয়টি। নিবন্ধটি জি-৭ এর নেতাদের নিজস্ব ভাবনার পর পরই শুধু নয়, প্রচ্ছদ স্টোরিতেও স্থান পেয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা কেবল নেতৃত্বেই বিশ্ব নেতাদের কাতারে থাকলেন না, উন্নয়ন ভাবনা ও আদর্শেও তিনি উঠে এলেন একই উচ্চতায়। ২৭ মে সকালে জাপানের উপদ্বীপ ইসে-শিমায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং উন্নত অবকাঠামোর গুরুত্ব নিয়ে তার ভাবনাগুলো বিশ্ব নেতাদের সামনে তুলে ধরেন। এর পরের সবকিছুই ইতিহাস। এক অন্যরকম উচ্চতায় বাংলাদেশ। এক অন্যরকম উচ্চতায় শেখ হাসিনা। মিডিয়ার কল্যাণে হয় তো দেশবাসী অনুষ্ঠানের পরিশীলিত একটি রূপ দেখতে পেয়েছেন। কিছু ভিডিও ফুটেজ, বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে কিছু ছবি দেখতে পেয়েছেন। কিন্তু এর বাইরের পরিবেশটা ছিল একেবারেই অন্যরকম। যার সবকিছুই বাংলাদেশের জন্য মর্যাদার, বঙ্গবন্ধুকন্যার জন্য সম্মানের। দেশবাসী দেখতে পাননি, পাশেই বসা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কীভাবে শেখ হাসিনাকে তার নেতৃত্বের জন্য কত প্রশংসা করেছেন এবং একটু পরপর মাথা কাত করে নিজ থেকেই কথা বলছিলেন। দূর থেকে ওবামার অভিব্যক্তি দেখে মনেই হচ্ছিল পুরো অনুষ্ঠানের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু মনে হয় শেখ হাসিনা। নিজের আসন থেকে উঠে এলেন কানাডার প্রেসিডেন্ট জাস্টিন ট্রুডু, সরাসরি চলে গেলেন শেখ হাসিনার আসনের পেছনে। বঙ্গবন্ধুকন্যার দৃষ্টি আকর্ষণ করে পেছনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়েই কথা বললেন ট্রুডু। দূর থেকে কথাগুলো শোনা না গেলেও, চেহারা দেখেই তার আন্তরিকতার মাত্রাটা খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছিল। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল অনেকটা এগিয়ে সেই বঙ্গবন্ধুকন্যার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বার বারই কথা বলছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। এই কথাগুলো কেন বললাম তার অবশ্য কারণও আছে। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা ছিলাম জাপানের হিলটন হোটেলে। আমার একটা মজ্জাগত অভ্যাস হচ্ছে নতুন কোনো জায়গায় গেলে নতুন নতুন লোকজনের সঙ্গে পরিচিত হওয়া। সেখানেও বেশ কযেকজনের সঙ্গে পরিচয় হয়। যারা ছিলেন পর্যটক, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা। কথাবার্তার একপর্যায়ে আমাদের জাপান যাওয়ার হেতু জানতে চাইলেন এবং যাদের সঙ্গে পরিচিত হলাম এর মধ্যে তিনজন বাংলাদেশকে চিনেনই না, মানচিত্রে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায় তা-ও তারা জানেন না। সেটা হয় তো তাদের দোষ না। আমরা বিশ্ববাসীর সবার কাছে বাংলাদেশকে পরিচিত করাতে পারিনি। একবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত করেছিলেন। যে পরিচয়টি ছিল বীর বাঙালির শৌর্য সাহসের ইতিহাস। আর সেই বীর বাঙালিকে এখন মর্যাদার আসনে নিয়ে যাওয়ার কাজটি করছেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা। যা এবারের জি-৭ সম্মেলনেও বিশ্ব মোড়লদের অভিব্যক্তি দেখে মনে হয়েছে। যে সম্মান তারা শেখ হাসিনাকে দিয়েছেন তা এই দেশের জনগণেরই সম্মান। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিকসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়নই শেখ হাসিনা তথা বাংলাদেশকে বিশ্ববাসীর কাছে এই মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। একজন যথাযথই বলেছেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে শিগগিরই এই জি-৭ হবে জি-৮ সম্মেলন। যেখানে অন্তর্ভুক্ত হবে আরেকটি নাম বাংলাদেশ। বাংলাদেশের যে উন্নয়ন বিশ্বমোড়লরা দেখতে পাচ্ছেন, তারা সেই সম্মানও দেখাচ্ছেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা থেকে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কারও পাচ্ছেন শেখ হাসিনা। শুধু বুঝল না আমাদের দেশের নামধারী তথাকথিত কিছু সুশীল। বিএনপি-জামায়াত স্টাইলে তারা শেখ হাসিনা বিরোধী কথাবার্তা বলেই যাচ্ছেন। যাই হোক, এরপরও নিন্দুকের মুখে ছাই দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার স্বপ্ন, ভিশন ২০২১-এর আগেই বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের দেশ, আর ২০৪১ সালের মধ্যে হবে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত বাংলাদেশ।

সর্বশেষ খবর