শুক্রবার, ৩ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা
ব্যবসায়ীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

শিল্পবান্ধব, ভ্যাটে এখনো কিছু জটিলতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ঘোষিত বাজেটকে শিল্পবান্ধব আখ্যা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল বাজেট ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এফবিসিসিআই, ডিসিসিআই ও রিহ্যাব আলাদাভাবে প্রতিক্রিয়া দেয়। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘ঘোষিত বাজেট দেশের বিনিয়োগ ও শিল্প প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। আগামী বছর প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে বাজেট ফলপ্রসূ হবে। আগামী বাজেটে তৈরি পোশাক শিল্পে ৩৫ শতাংশ হারে করপোরেট কর কমিয়ে ২০ শতাংশ করায় সরকারকে অভিনন্দন জানাই। তবে কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নতুন করে করারোপ করা হয়েছে। কোনো শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে করারোপ করা হলে তা দেশের প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ ছাড়া করারোপের ফলে শিল্প বিনিয়োগ কমে যেতে পারে। ফলে কর্মসংস্থানের হারও কমবে। তাই আমাদের অনুরোধ, যেসব শিল্পের ওপর করারোপ করা হয়েছে তা প্রত্যাহার করা হোক।’ গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘ভ্যাট-সংক্রান্ত জটিলতার সব ধরনের অবসান করা হবে বলে আশা করি। প্যাকেজ ভ্যাট অব্যাহত থাকায় অর্থমন্ত্রীকে অভিনন্দন। তবে এখনো বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভ্যাটের জটিলতা রয়েছে। সেগুলোর সমাধান করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, বিশ্বমন্দা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার সাহসী বাজেট বড় উপহার। তবে রাজস্ব ঘাটতি ৯২ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা আরও কমানো গেলে ভালো হতো। বাজেট প্রস্তাবনায় সরকারি কর্মকর্তাদের আয়করসহ নতুন করদাতা সৃষ্টির প্রয়াস অবশ্যই প্রশংসনীয়। তা না হলে বর্তমান কর প্রদানকারীর ওপরই চাপ অব্যাহত থাকবে। বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও সুষ্ঠু শিল্পায়নের স্বার্থে এলএনজি আমদানিসহ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতকে অগ্রাধিকার বাজেটের গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি বলেন, রপ্তানি পোশাক শিল্পের ফায়ার ডোর, এলইডি বাল্ব, এলইডি প্যানেল, স্প্রিংক্যাল, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা, শুল্কহার হ্রাস করায় পোশাক শিল্প খাত কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়নে সহায়ক হবে। মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজে (ডিসিসিআই) কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি হোসেন খালেদ বাজেটকে শিল্পবান্ধব বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে ভ্যাট জটিলতার পুুরোপুরি অবসান করার অনুরোধ করেন। রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) পক্ষ বলা হয়েছে, বাজেটে আবাসন খাতের আলোচিত ১৩টি প্রস্তাবনা বিবেচিত হয়নি। গণমাধ্যমে পাঠানো বাজেট প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণায় আবাসন খাতে প্রস্তাবিত আয়করের পরিমাণ পরিবর্তনের ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের মৌলিক অধিকার বাসস্থানের জন্য ব্যয় বেড়ে যাবে। এতে ২ কোটি মানুষের আয়ের এ খাতটি আরও মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। আর আবাসন খাতের এ সংকট ২৬৯টি লিংকেজ শিল্পকে আরও সংকটে ফেলবে। প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পাস করার আগে রিহ্যাবের ১৩ দফা দাবি বিবেচনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’

সর্বশেষ খবর