রবিবার, ৫ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

শেষ ধাপেও সংঘাত সহিংসতা

জাল ভোট কেন্দ্র দখল নিহত আরও ৫ । ছয় ধাপে গেল ১৩২ প্রাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেষ ধাপেও সংঘাত সহিংসতা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সশস্ত্র সংঘর্ষ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

শেষ ধাপটাও ভালো হলো না ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের। সংঘাত-সংঘর্ষ আর প্রাণহানিসহ নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে গতকাল সম্পন্ন হলো ষষ্ঠ ধাপে ৬৯৮টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ। এ সময় সহিংসতায় ফেনীর সোনাগাজী, নোয়াখালী সদর, সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে একজন করে নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া পঞ্চম ধাপে আহত এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

নির্বাচন কর্মকর্তা, পুলিশসহ আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। অনিয়মের কারণে প্রায় অর্ধশত ইউপিতে ভোট গ্রহণ স্থগিত করতে হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। গোলাগুলি আর সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে বেশ কিছু স্থানে। দখল, বর্জন, ব্যালট ছিনতাই হয়েছে আগের মতোই। সকাল থেকেই গোলাগুলি আর সিল মারার মহোৎসব দেখা যায় বেশ কিছু ইউপিতে। ষষ্ঠ ধাপে ৪৬টির মধ্যে ২৫ জেলায় সংঘর্ষ হয়েছে বেশি। ষষ্ঠ ধাপ পর্যন্ত নির্বাচনী সহিংসতায় ১৩২ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, পঞ্চম ধাপের মতো এবারও অধিকাংশ জেলায় ভোটকেন্দ্র দখলের মহোৎসব হয়েছে। ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়নি। বেশ কিছু ইউনিয়নে আগের রাতেই বাক্স ভর্তি করেছেন আওয়ামী লীগের সমর্থকরা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলছে, ইউপি নির্বাচন ‘কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ ছাড়া সুষ্ঠু হয়েছে। বিএনপি এ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এতে অংশ নিয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, ‘সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আমরা সব ধাপেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছি। তাই ষষ্ঠ ধাপের আগের রাতে সিল মারার ঘটনা একদমই ঘটেনি।’ ষষ্ঠ ধাপে ৪৬ জেলার ৯২ উপজেলার ৬৯৮ ইউপিতে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভোটার ছিলেন ১ কোটি ১০ লাখের বেশি। ভোটকেন্দ্র ছয় হাজার ২৮৭টি। চেয়ারম্যান পদে ৩ হাজার ২২৩ জন, সাধারণ সদস্য পদে ২৫ হাজার এবং সংরক্ষিত পদে ৫ হাজারের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ২৫ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের করেরহাট ও কুমিল্লার মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর ইউপির সব পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রার্থীরা। এক লাখের বেশি ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দেড় লাখের মতো সদস্য নিয়োজিত ছিলেন ভোটের দায়িত্বে। এর আগের পাঁচ ধাপে চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থীরা ২ হাজার ২৬৭ ইউপিতে ও ধানের শীষের প্রার্থীরা ৩১০ ইউপিতে জয়ী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান হয়েছেন ৬৯৬ জন। ইসির হিসাবে, প্রথম ধাপে ৭৪ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ৭৮ শতাংশ, তৃতীয় ধাপে ৭৬ শতাংশ, চতুর্থ ধাপে ৭৭ শতাংশ ও পঞ্চম ধাপে ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর— ময়মনসিংহ : জেলার পাঁচ উপজেলার ৫২ ইউপিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে গফরগাঁওয়ে সংঘর্ষ-বর্জন-গুলি ও নিহতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় শেষ ধাপের ইউপি নির্বাচন। অন্য সব উপজেলায় তুলনামূলক শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। গফরগাঁওয়ে নির্বাচন চলাকালে দুপুরে সালটিয়া পুকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়া ঘিরে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থী মোশাররফ হোসেন ও আবদুল করিমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শাহজাহান (৪৮) নামের একজনের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। আহত হন কমপক্ষে সাতজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়লে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নোয়াখালী : সদর উপজেলার নেয়াজপুরে নির্বাচনী সহিংসতায় ছাত্রলীগের স্থানীয় এক কর্মী নিহত হয়েছেন। নিহত ইয়াছিন আরাফাত (২৩) নেয়াজপুর ইউনিয়নের মো. সেলিমের ছেলে। তিনি ছাত্রলীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে বিকালে তার মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানান, সকালে ভেলানগর মোহাম্মদিয়া এবতেদায়ি মাদ্রাসা কেন্দ্রের বাইরে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ফেনী : সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের চরভৈরব হাজি তোফায়েল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। নিহত নূর হোসেন শিপন ইউপি সদস্য প্রার্থী কাউছারের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাত সদস্যসহ ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। তিনটি ব্যালট বক্স ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পুলিশ একজনকে আটক করেছে। ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। সুনামগঞ্জ : জেলার ধর্মপাশায় দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কোহিনূর (১৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ছয়জন। গতকাল সন্ধ্যায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার সময় উপজেলার পাইকরাটি ইউনিয়নের বেকাইগড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কোহিনূর ওই গ্রামের মৃত শামসুল হকের ছেলে। আহতদের পরিচয় জানা যায়নি। পাবনা : পঞ্চম ধাপে নির্বাচনী সহিংসতায় ঈশ্বরদী উপজেলার শাহাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে গুরুতর আহত আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম কালু (৪০) গতকাল মারা গেছেন। বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। কালুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বড় ভাই শাহজাহান আলী। ২৮ মে পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দুই নেতা হাশেম মেম্বার গ্রুপ ও মিন্টু  মেম্বার গ্রুপের মধ্যে বাবুলচরা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র দখল নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। লক্ষ্মীপুর : রামগঞ্জে কেন্দ্র দখল, জাল ভোট প্রদানসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে পাঁচটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। নোয়াগাঁও ইউনিয়নের হোটাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্র দখল ঘিরে নৌকা ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বাইরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষে ৮-১০ রাউন্ড গুলিবিনিময় হয়। এতে আহত হন চারজন। টাঙ্গাইল : ঘাটাইলে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জামুরিয়া ইউনিয়নে সাধারপাড়া গলগণ্ড কেন্দ্রে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে সাতজন আহত হয়েছেন। কিশোরগঞ্জ : জেলার পাঁচ উপজেলার ৪২টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। করিমগঞ্জ উপজেলার দেহুন্দা ইউনিয়নের ভাটিয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। চট্টগ্রাম : নির্বাচনী সহিংসতায় এক ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। বেলা ১১টার দিকে সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের ২ নম্বর কেন্দ্রের আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে নৌকার প্রার্থী রমজান আলী গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন পাঁচজন। মৌলভীবাজার : সদর উপজেলার মোস্তফাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। এরা হলেন সুজন দাশ (২৫), জিতু মিয়া (২৬), তারেক আহমদ (১৮), ফখরুল আহমদ (২৮), রুবেল মিয়া (২৬) ও রুয়েল আহমদ (১৮)। মাদারীপুর : শিবচর উপজেলার সন্ন্যাসীরচর ইউপির বিএনপি প্রার্থী গিয়াসউদ্দিন মৃধা কেন্দ্র দখল, কারচুপি, এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ভোট বর্জন করেন। কুমিল্লা : দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের সরকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার সময় প্রতিহত করতে গেলে সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধসহ আটজন আহত হন। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়। এদিকে দাউদকান্দি উপজেলার ঝিংলাতলী ইউনিয়নে নৌকার সমর্থকরা কেন্দ্র দখলে ব্যর্থ হয়ে ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া : সকাল সাড়ে ১০টায় নাওঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ৩০-৪০ জনের বহিরাগত সন্ত্রাসী চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছয়টি ব্যালট বই ও সিল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। গাইবান্ধা : গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গুমানিগঞ্জ ইউনিয়নের বালুভড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নরসিংদী : ভোট বর্জন, নানা অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার নয়টি ও পলাশের দুটি ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। শেরপুর : শ্রীবর্দী উপজেলার গোসাইপুর ও রানীশিমুল ইউনিয়নের দুটি কেন্দ্রে মেম্বার প্রার্থীদের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে ১৩ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৩৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এদিকে বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোটের মহোৎসব হয়েছে বলে স্বতন্ত্র ও বিএনপি প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন। বগুড়া : দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া তিন উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে সোনাতলা উপজেলার বালুয়া ইউনিয়নে চারজন চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। নাটোর : ব্যাপক অনিয়ম, কারচুপি ও জাল ভোটের মধ্য দিয়ে গুরুদাসপুর ও বাগাতীপাড়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, এজেন্টদের বের করে দেওয়া, ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা, জাল ভোট, প্রকাশ্যে ভোট প্রদান ও ব্যালট কেড়ে নিয়ে সিল মারার সত্যতা মিলেছে। রাঙামাটি : ভোট জালিয়াতির অভিযোগে ভোট বর্জন করেছেন বিএনপির তিন, আওয়ামী লীগের এক ও স্বতন্ত্র এক চেয়ারম্যান প্রার্থী। এ ছাড়া নির্বাচন চলাকালে কাপ্তাই, কাউখালী, লংগদু ও বরকল উপজেলায় কেন্দ্রের বাইরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঝিনাইদহ : জাল ভোট ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগে শৈলকুপা উপজেলায় বিএনপির তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন।

সংঘাত প্রাণহানি ঘটলেও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, কিছু কেন্দ্রে অনিয়ম ও সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে এবং প্রাণহানিও হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। তবে সামগ্রিকভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। গতকাল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের শেষ ধাপে ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি এসব কথা বলেন। এ ছাড়া সমাজে অস্থিরতা বেড়েছে এ কারণে নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। ষষ্ঠ ধাপের নির্বাচনে সামগ্রিকভাবে উন্নতি হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় : কেন্দ্র দখলের ‘মহোৎসবের’ অভিযোগের পর ষষ্ঠ ও শেষ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ ভোটে নানা অনিয়মের নালিশ প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সঙ্গে বৈঠক করে। সিইসির সঙ্গে আধা ঘণ্টার বৈঠক শেষে সেলিমা রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সিইসিকে আমরা বলেছি, এ ইউপি ভোটে আমাদের উপলব্ধি হয়েছে আপনাদের ও এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

প্রমাণ হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাক, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এখন দরকার নির্দলীয় ব্যবস্থা। পঞ্চম ধাপ পর্যন্ত সহিংসতায় শতাধিক মৃত্যুর পর গতকাল ষষ্ঠ ও শেষ ধাপে ৬৯৮টি ইউনিয়নে ভোট হয়। ভোটগ্রহণ শুরুর পরপরই নড়াইলের লোহাগড়ায় একটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এক প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। আগে ধাপগুলোর ভোটেও অনিয়মের অভিযোগ সিইসির কাছে জানিয়েছিল বিএনপি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর