রবিবার, ১২ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

৯০ শতাংশ প্রস্তাবই বাস্তবায়ন হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক

৯০ শতাংশ প্রস্তাবই বাস্তবায়ন হয়নি

আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যবসায়ীদের পেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর ছুরি চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ। এনবিআরকে এফবিসিসিআই ৪৪৭টি প্রস্তাব দিলেও বাজেটে ৯০ শতাংশই গৃহীত হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ৫৩টি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এই বাজেট নিয়ে আমি লজ্জাবোধ করছি। তার অভিযোগ, রাজস্ব কর্মকর্তারা চান না, দেশে রাজস্ব বাড়ুক। এনবিআর কর্মকর্তারাই ব্যবসায়ীদের বলেন, সরকারকে কেন রাজস্ব দেবেন, আমাদের দিন। গতকাল মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন-এফবিসিসিআই আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব কথা বলেন আবদুল মাতলুব আহমাদ। তিনি প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর এফবিসিসিআইর লিখিত মতামত পাঠ করেন। আরও বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইর প্রথম সহ-সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাজেট পেশের আগে এনবিআরের সঙ্গে আমিসহ সারা দেশের বিভিন্ন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা ৪ মাসব্যাপী পার্টনারশিপ ডায়লগ করেছি। কিন্তু সেই ডায়লগের ফলাফলে আমরা হতাশ হয়ে গেছি। আজ খুব দুঃখ লাগছে। এফবিসিসিআই সভাপতি হিসেবে লজ্জাবোধ করছি। ফলে আগামীতে বাজেট মিটিংয়ে আমরা যাব কিনা, সেটা এখন চিন্তার বিষয়। তবে এনবিআরের উদ্দেশে বলছি, ব্যবসায়ীদের স্বার্থবিরোধী কিছু করবেন না।

তিনি অভিযোগ করেন, সরকার নতুন আইন বাস্তবায়নের জন্য বিগত চার বছরেও সিস্টেম ডেভেলপ করতে পারেনি। আমরা অনলাইনে ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে চাই। এতে রাজস্ব আয় বাড়বে। বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিআইএন নিয়ে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার পদক্ষেপকে ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন কৃষককেও করের আওতায় আনা উচিত। এনবিআরকে ব্যবসাবান্ধব ও দেশপ্রেমিক হতে হবে। এফবিসিসিআই প্রথম সহ-সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, মাত্র এক বছরের ব্যবধানে ১৪ হাজার টাকার প্যাকেজ ভ্যাট বাড়িয়ে ২৮ হাজার টাকা নির্ধারণ ব্যবসায়ীদের আহত করেছে। এতে ছোট ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ কারণেই এখন যাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, তারাই সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করছেন। জাতীয় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রার পরিমাণ ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪৮০ কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়ে এফবিসিসিআই বলেছে, উৎপাদনশীল খাতে রাজস্বের চাপ এবং ব্যবসায়িক খরচ বৃদ্ধির কারণে অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ার গতি ব্যাহত হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে বর্তমানে ভ্যাট ব্যবস্থায় ২২টি সেবার ক্ষেত্রে সঙ্কুচিত ভিত্তি মূল্য ২৫ শতাংশ বাড়ানোর কারণে সেবা খাতসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিছু খাতে ভ্যাট অব্যাহতি তুলে নেওয়ায় দেশীয় শিল্প পিছিয়ে পড়বে। তাঁত শিল্প টিকে থাকতে পারবে না। এফবিসিসিআই বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে অবকাঠামো খাতের ১০টি মেগা প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সময়োচিত পদক্ষেপ, সুলভ অর্থসংস্থান, যোগ্য ও দক্ষ প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করতে হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ডলার হ্যাকিং এবং বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ব্যাংকিং সেক্টরের শৃঙ্খলায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অন্যদিকে পুঁজি হারানো সরকারি ব্যাংকে পুনঃ অর্থায়নের জন্য জনগণের করের টাকা থেকে ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ফলে এসব ব্যাংকের অনিয়মতান্ত্রিক কার্যক্রম আরও বাড়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

সর্বশেষ খবর