মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

গ্রেফতার ছাড়াল ১০ হাজার

বিশেষ প্রতিনিধি

গ্রেফতার ছাড়াল ১০ হাজার

জঙ্গি দমনে দেশজুড়ে পুলিশের চলমান সাঁড়াশি অভিযানে গত তিন দিনে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে এই সময়ে মোট গ্রেফতারের সংখ্যা আট হাজার ৫৬৯ জন। এর মধ্যে সন্দেহভাজন জঙ্গির সংখ্যা ১১৯ জন। পুলিশ সদর দফতর থেকে সরবরাহ করা সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রবিবার ভোর ৬টা থেকে গতকাল ভোর ৬টা পর্যন্ত মোট তিন হাজার ২৪৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৪ জন সন্দেহভাজন জঙ্গি ছাড়াও ২ হাজার ৫৭৮ জন পরোয়ানাভুক্ত আসামি। এ ছাড়া অস্ত্র মামলায় ১৯ জন, মাদক মামলায় ১৬০ জন এবং অন্যান্য  মামলায় ৪৫৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, রবিবার গ্রেফতার ৩৪ জঙ্গির মধ্যে ২৫ জন জেএমবি, তিনজন হিযবুত তাহরির, তিনজন আনসার আল ইসলাম ও তিনজন আল্লাহর দলের সদস্য। ওই ২৪ ঘণ্টার অভিযানে ১৩টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৩৩ রাউন্ড গুলি, আটটি চাপাতি, দুটি পেট্রলবোমা, ৩১টি ককটেল ও ২৮টি উগ্রপন্থি বই জব্দ করা হয়।

চট্টগ্রামে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আকতারের স্ত্রী খুন হওয়ার পর বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দফতরে আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে এই সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। অভিযানের প্রথম তিন দিন মোট আট হাজার ৫৬৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ জঙ্গিসহ দুই হাজার ৮১৫ জন এবং দ্বিতীয় দিন ৪৮ জঙ্গিসহ দুই হাজার ১৩২ জনকে গ্রেফতারের কথা পুলিশ সদর দফতর থেকে জানানো হয়েছে। শুক্রবার থেকে সারা দেশে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। গতকাল ছিল অভিযানের চতুর্থ দিন। প্রথম দিন জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার ৩৭ জনের মধ্যে ২৭ জন জেএমবি ও জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশের (জেএমজেবি) সাতজন রয়েছেন। বাকি তিনজনের পরিচয় সম্পর্কে জানায়নি পুলিশ সদর দফতর। ওই দিন গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে পরোয়ানার এক হাজার ৮৬১ জন, নিয়মিত মামলার ৯১৭ জন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার মামলার ১৯ জন ও মাদক উদ্ধার মামলার ৩৫৮ জন রয়েছে। দ্বিতীয় দিন গ্রেফতার জঙ্গিবাদে অন্যান্যের মধ্যে এক হাজার ৪৯৬ জন গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি। আর নিয়মিত মামলার আসামি ৫৮৮ জন। তৃতীয় দিনের অভিযানে পরোয়ানার ২ হাজার ৫৭৮ জন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার মামলায় ১৯ জন, মাদক উদ্ধার মামলায় ১৬০ জন ও অন্যান্য মামলায় ৪৫৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিজস্ব প্রতিবেদক ও জেলা প্রতিনিধিদের পাঠনো খবর—

বগুড়া : পৃথক সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তিন জেএমবি সদস্যসহ বিভিন্ন মামলায় ১০০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার জেএমবি সদস্যরা হলেন আবদুল আওয়াল (২৫), আহসান হাবিব ওরফে জামাত আলী (৩৬) ও আবু তাহের (৩৫)।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরির চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার প্রধান ওমর ফারুককে অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। গ্রেফতার ওমর ফারুক সদর উপজেলার রানীহাটি ইউনিয়নের ঘোড়াপাখিয়া গ্রামের সাদিকুল ইসলামের ছেলে। রবিবার রাত ১টার দিকে গোপন বৈঠকের প্রস্তুতির সময় তাকে ঘোড়াপাখিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, এক রাউন্ড গুলি, ৫০০ গ্রাম গান পাউডার ও লিফলেট উদ্ধার করা হয়। সদর মডেল থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চত করেছেন। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৪ জামায়াত কর্মীসহ আরও ৩১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

জয়পুরহাট : বিশেষ অভিযান চালিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ সন্দেহভাজন জেএমবি সদস্যসহ ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবাির রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে সদর থানা দুই সন্দেহভাজন জেএমবিসহ ২২ জন, পাঁচবিবি থানা তিন সন্দেহভাজন জেএমবিসহ ১১ জন, কালাই থানা ৪ জন, আক্কেলপুর থানা ২ জন এবং ক্ষেতলাল থানা ৪ জনকে গ্রেফতার করে।

গাইবান্ধা : পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে জেলায় এক জেএমবি সদস্য ও বিএনপি-জামায়াতের ৩ নেতা-কর্মীসহ ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গাইবান্ধার সাত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রবিবার সকাল থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি ইসরাইল হোসেন জানান,  সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় জেএমবি সদস্য সন্দেহে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আতিকুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে পুলিশ শান্তিরাম কালিয়ার ছিড়ায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার আতিকুর রহমান শান্তিরাম কালিয়ার ছিড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। তবে তার পরিবারের দাবি, তিনি জেএমবি সদস্য নন।

গোপালগঞ্জ : সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাত থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে কোটালীপাড়া থেকে ৭ জন, গোপালগঞ্জে ৩ ও মুকসুদপুর থেকে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নড়াইল : জঙ্গি সন্দেহে সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি গাজী আবদুল্লাহ আল মামুনকে (২৮) আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রবিবার বিকেলে সদরের লস্করপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। মামুন লস্করপুর গ্রামের গাজী মশিয়ার রহমানের ছেলে। সারা দেশে একযোগে ৬৩ জেলায় বোমা হামলা মামলার আসামি ছিলেন মামুন। এ মামলায় মামুন প্রায় দুই বছর কারাগারে ছিলেন। পরে এ মামলা থেকে তিনি খালাস পান। এদিকে পুলিশের বিশেষ অভিযানে দুই জামায়াত কর্মীসহ ৪৮ জনকে আটক করা হয়েছে। রবিবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এর মধ্যে নড়াইল সদর থানায় এক জামায়াত কর্মীসহ ১৯ জন, লোহাগড়া থানায় এক জামায়াত কর্মীসহ ১৫ জন, কালিয়া থানায় ৪ জন ও নড়াগাতি থানায় ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।

পাবনা : ঈশ্বরদীতে এক জেএমবি সদস্যসহ জেলার নয়টি উপজেলায় পৃথক অভিযানে ৭১ জনকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত তাদের আটক করা হয়। পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোয়েন্দা) সিদ্দিকুর রহমান জানান, পাবনার ৯ উপজেলার ১১ থানা এলাকায় পুলিশের এই সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ২০ জন, জেএমবির একজন ও বাকিরা অন্যান্য নিয়মিত বিভিন্ন মামলার আসামি। ঈশ্বরদী উপজেলার মিরকামারী গ্রামের মৃত নবীর উদ্দিনের ছেলে বাহার উদ্দিনকে (৫০) রবিবার রাতে আটক করা হয়। আটক বাহার উদ্দিন জেএমবির সদস্য।

যশোর : রবিবার রাতে যশোরের ৯টি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৯২ জনকে আটক করেছে। আটকদের মধ্যে দুই জঙ্গি ও জামায়াত-শিবিরের ২০ কর্মী রয়েছেন। জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিকে অভয়নগর থানার ওসি শেখ মো. নাসিরউদ্দিন জানান, অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা আহমদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় সরকারবিরোধী বৈঠক করার সময় জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরির আল্লাহর দলের সক্রিয় সদস্য এস এম উজ্জ্বল (৩২) ও মোহাম্মদ আলী মুন্সী (২৫) নামে দুই যুবককে আটক করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম : বিশেষ অভিযানে গতকাল দুই জেএমবি সদস্যসহ ৩১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার জেএমবি সদস্যরা হলেন ফুলবাড়ী উপজেলার ধুলাকুটি এলাকার কৃষ্ণানন্দ বকসী গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে সুমন পারভেজ (১৯) এবং রাজারহাট উপজেলার মল্লিক বেগ এলাকার সাইদুর রহমানের ছেলে হাসানুর ওরফে হিমেল ওরফে জাহিদ (২৫)।

সিলেট : জেলা ও মহানগর পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৪৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। রবিবার সকাল থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। এর মধ্যে মহানগর পুলিশের আওতাধীন ছয় থানা ২১ জনকে এবং জেলার আওতাধীন ১২ থানা পুলিশ ২৫ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারদের মধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের এক সদস্য রয়েছেন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা। জুম্মান চৌধুরী নামের ওই হিযবুত জঙ্গিকে রবিবার রাতে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ আটক করে।

রংপুর : জেএমবির এক সদস্যসহ ৮৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের হলদিবাড়ী উচ্চবিদ্যালয় মাঠ থেকে জেএমবি সদস্য জাহিদ হোসেনকে (২০) গ্রেফতার করা হয় বলে কাউনিয়া থানার ওসি আবদুল কাদের জিলানী জানান। এ ছাড়া বিভিন্ন অপরাধে জেলার আট উপজেলা থেকে আটক করা হয় আরো ৮৬ জনকে।

জামালপুর : একজন তালিকাভুক্ত জেএমবি নেতাসহ ৩৪ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাত থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে রয়েছেন মাদারগঞ্জ এলাকার জেএমবি সদস্য মওলানা আবদুস সাত্তার, সরিষাবাড়ী উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি গোলাম রব্বানী ও শিবির সদস্য আবদুর রহমান।

বাগেরহাট : পুলিশের বিশেষ অভিযানে জেএমবির এক জঙ্গিসহ ৫৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার সকাল থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত জেলার নয়টি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। জেএমবির কেন্দ্রীয় সদস্য সদরের কালদিয়া মারকাজুল ইসলামিয়া মাদ্রাসার সুপার মাওলানা জোবায়ের হোসেন মংলা উপজেলার শনিরগন্ড গ্রামের সিরাজ ঢালীর ছেলে।

মানিকগঞ্জ : জেলার বিভিন্ন  এলাকায়  বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে রবিবার রাতে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে সদর থানায় দুজন, সিংগাইর থানায়  দুজন, সাটুরিয়া থানায় একজন, শিবালয় থানায় একজন, হরিরামপুর থানায় একজন ও দৌলতপুর থানায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়।

নওগাঁ : দেশব্যাপী পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানের অংশ হিসেবে রবিবার সকাল থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এক জামায়াত নেতা, এক শিবির ক্যাডার ও এক জেএমবি সদস্যসহ ৭১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে তিনটি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার জেএমবি সদস্য মো. হাতেম আলী (৪৫)মান্দা উপজেলার তালপাতিলা গ্রামের মৃত তঞ্জেব আলীর ছেলে।

চট্টগ্রাম : জামায়াত-শিবিরের ১৭ নেতা-কর্মীসহ ২২৩ জনকে আটক করা হয়েছে। রবিবার সকাল থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত টানা অভিযানে তাদের আটক করা হয়। তবে এর মধ্যে কাউকে জঙ্গি সম্পৃক্ততায় আটক করা হয়নি বলে জানা যায়।

লালমনিরহাট : রবিবার দিবাগত গভীর রাতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরসহ ২৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। লালমনিরহাটের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল)) হোসেন শহীদ সোহওরার্দী এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নাটোর : বড়াইগ্রাম উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি প্রভাষক আবুল হোসাইনকে সাঁড়াশি অভিযানে আটক করা হয়েছে। আটক আবুল হোসাইন উপজেলার মামুদপুর গ্রামের মৃত সুরুজ আলীর ছেলে ও মৌখাড়া ইসলামিয়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : সাঁড়াশি অভিযানে রবিবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত  ৬৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে জেএমবি সদস্য জহিরুল আলম শহরের কাউতলী থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাড়ি আখাউড়ায়। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল কাইয়ুম জানান, সপ্তাহব্যাপী সাঁড়াশি অভিযানের অংশ হিসেবে জেলার নয়টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

দিনাজপুর : পুলিশের বিশেষ অভিযানে এক জঙ্গিসহ ৬৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, রবিবার রাত ১০টা থেকে গতকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত জেলার ১৩ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জামাল উদ্দিন নামে এক জঙ্গিসহ ৬৬ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক জঙ্গি সদস্য জামাল উদ্দিন চিরিরবন্দর উপজেলার নসরতপুর গ্রামের বাসিন্দা।

মৌলভীবাজার : জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় গতকাল অভিযান চালিয়ে ২০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে সদর উপজেলা ৪, শ্রীমঙ্গল ৩, কমলগঞ্জ ৪, রাজনগর ২, কুলাউড়া ২, বড়লেখা ৩ ও জুড়ী উপজেলা থেকে ২ জনকে আটক করা হয়।

টাঙ্গাইল :  সদর উপজেলার বরুহা এলাকা থেকে এক জেএমবি সদস্যসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ৭০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসলাম খান আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আটকদের মধ্যে জেএমবি সদস্য আমানউল্লাহ লিটন সদর উপজেলার বরুহা গ্রামের আবুল হাসেমের ছেলে।

নোয়াখালী : জামায়াত-শিবিরের ১৫ জন ও অন্য ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে। রবিবার রাত থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়।

বরগুনা : জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার বিকেল থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত বরগুনার ছয়টি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে রয়েছেন সদর উপজেলায় ৬ জন, পাথরঘাটায় ১২, বামনায় ৪, বেতাগীতে ২, আমতলীতে ৫ ও তালতলীতে ৩ জন।

সিরাজগঞ্জ : সাঁড়াশি অভিযানে জামায়াত-শিবিরের তিন নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন মামলার ৩৬ জনকে আটক করা হয়। অভিযানকালে একটি পিস্তল, চারটি ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার সকাল থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে এ ৩৬ জনকে আটক করে।

নীলফামারী : বিশেষ অভিযানে জেএমবির এক সদস্যসহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা : পুলিশের বিশেষ অভিযানে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। রবিবার রাতে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এরা বিভিন্ন মামলার আসামি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

লক্ষ্মীপুর : সাঁড়াশি অভিযানে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ৪২ জনকে আটক করা হয়েছে। রবিবার রাত থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত সদর, চন্দ্রগঞ্জ, রায়পুর, রামগঞ্জ, কমলনগর ও রামগতির বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

ফেনী : জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাত থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। গ্রেফতার ৭ জনই জামায়াত-শিবির কর্মী।

সর্বশেষ খবর