মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা
এসপির স্ত্রী খুন

সাত দিনেও অগ্রগতি নেই

দফায় দফায় বৈঠকে কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

সাত দিনেও অগ্রগতি নেই

পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুর নির্মমভাবে হত্যার সাত দিনেও মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। এ হত্যাকাণ্ডের পরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা চট্টগ্রামে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হত্যাকারীদের গ্রেফতারে কঠোর নিদের্শনাসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা  দফায় দফায় বিভিন্ন ‘কৌশলী’ বৈঠকে অনেক পরিকল্পনাও করেছেন। তবে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যে আবু নাছের গুন্নু ও শাহজাহান রবিন নামের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাও পরিবর্তন করা হয়েছে। এদিকে, রবিবার চট্টগ্রামে এক সুধী-সমাবেশে তদন্ত কার্যক্রমে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন খোদ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক। তবে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের সফল কিছু অভিযানের কারণে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান ও আটক, রেয়াজ উদ্দিন বাজারে স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসায়ী ফটিকছড়ির আলোচিত ‘স্বর্ণ আবু’র গোডাউন থেকে অবৈধ স্বর্ণ উদ্ধার ও জামায়াত-শিবিরসহ অনেক বিষয় জড়িত আছে এমন সন্দেহের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত। এ নিয়ে ইতিমধ্যে পৃথক পাঁচটি শক্তিশালী অনুসন্ধান কমিটিও গঠন করেছে সিএমপি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের পিছনে জঙ্গিগোষ্ঠী ও স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসায়ীদের হাত থাকতে পারে। মনোবল দুর্বল করার জন্য কেউ কৌশলে এ ঘটনা ঘটাতে পারে। চিহ্নিত অনেক স্থানে এখনো যাওয়া হয়নি। ঘটনাস্থল ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলাপ করে ঘটনার বিষয়ে এখনো কিছু বের করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন তারা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (সিএমপি) ইকবাল বাহার সাংবাদিকদের বলেছেন, আরও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করে গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ) মো. কামরুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে এ ঘটনার মূল হোতাদের খুঁজে বের করতে। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যেই মিতুর খুনিদের বের করতে পারবেন। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৫ জুন জিইসির মোড়ে সকালে প্রকাশ্যে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীকে খুন করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনা তদন্তে পুলিশের সব ইউনিট একযোগে কাজ শুরু করেছে। মাঠে নেমেছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও। তবে এখনো জানা যায়নি খুনের মোটিভ।

পাঁচটি তদন্ত কমিটি : মিতু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পৃথক পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন সিএমপি। এ কমিটির কাজ হচ্ছে অভিযান, আসামিকে জেরা, কেস ডকেট পর্যালোচনা, ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যালোচনা এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ। এ অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) নাজমুল আলমকে। জেরার জন্য গঠিত কমিটির প্রধান হয়েছেন সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) হুমায়ন কবির। কেস ডকেট পর্যালোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আবদুর রউফ। ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ কমিটির প্রধান করা হয়েছে সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী কমিশনার (আইসিটি) জাহাঙ্গীর আলম। গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে নেতৃত্ব দেবেন সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) কাজী মুত্তাকী ইবন মিনান। এ পাঁচ কমিটির প্রতিটিতে ৫ থেকে ৯ জন করে সদস্য রাখা হয়েছে বলে সিএমপি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সর্বশেষ খবর