মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

সংঘাতে গেল আরও দুই প্রাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষ হলেও ওই নির্বাচনের জের ধরে সংঘর্ষ-সংঘাতের ঘটনা চলছেই। নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় গতকালও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নাটোরের সিংড়ায় ফালা দিয়ে আঘাত করে রেজাউল করিম নামে এক কৃষককে হত্যা করা হয়েছে। গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় পরাজিত চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীর হামলায় আহত আবদুর রহমান নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বিকাল সোয়া ৫টার দিকে তিনি মারা যান। সব মিলিয়ে ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে এ পর্যন্ত সহিংসতায় প্রাণ দিতে হলো ১৪২ জনকে।

নাটোর প্রতিনিধি জানান, সিংড়ায় গতকাল বেলা ২টায় ফালা দিয়ে আঘাত করে রেজাউল করিম (২৮) নামে এক কৃষককে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় আরও চারজন আহত হয়েছেন। রেজাউল করিম উপজেলার বেড়াবাড়ি গ্রামের রহিদুল ইসলামের ছেলে। সিংড়া থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ডাহিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম ও বিদ্রোহী প্রার্থী রেজার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ভোটের সময় থেকেই উত্তেজনা চলছিল। এ ছাড়া মসজিদের খাস একশ বিঘা সম্পত্তি নিয়ে এলাকায় বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল রেজাউল করিম নিজ গ্রাম বেড়াবাড়ি যাওয়ার পথে গোয়ালপাড়া মাটির সড়কের ওপর বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজা ও তার ভাই সাইফুলের নেতৃত্বে ফালার আঘাত করলে কৃষক রেজাউল ঘটনাস্থলেই মারা যান। ডাহিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রমজান আলী তালুকদার বলেন, রেজা ও সাইফুলের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। এরা মূলত এলাকার চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী। এদের কোনো দল নেই। এরা সুবিধাভোগী হাইব্রিড আওয়ামী লীগ। তিনি এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সিংড়া থানার ওসি নাসির উদ্দিন মণ্ডল জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই সংঘর্ষ। আহতদের হাসপাতালে এবং লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, ফুলছড়ি উপজেলায় পরাজিত চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীর হামলায় আহত আবদুর রহমান (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বিকাল সোয়া ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

আবদুর রহমান ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার আবদুল গণি মিয়ার বড় ভাই। তিনি গজারিয়া ইউনিয়নের গলনার চর এলাকার মৃত কালু মিয়ার ছেলে। এর আগে গত ৭ জুন ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের লাঙ্গল প্রতীকের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুস আলী ও মেম্বার প্রার্থী বেলাল হোসেনের কর্মী-সমর্থকদের হামলায় আবদুর রহমান, ফুলছড়ি থানার ওসি (তদন্ত) জামাল উদ্দিন, পুলিশের চার সদস্য ও নবনির্বাচিত মেম্বার গণি মিয়াসহ ১০ জন আহত হয়েছিলেন। ফুলছড়ি থানার ওসি খায়রুল বাশার জানান, আহতদের মধ্যে মেম্বার গণি মিয়া ও তার বড় ভাই আবদুর রহমানকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি আরও জানান, হামলার ঘটনায় ফুলছড়ি থানার ওসি জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩২ জন নামীয় ও অজ্ঞাত আরও ৫ শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে ফুলছড়ি থানায় মামলা করেন।

সর্বশেষ খবর