শিরোনাম
শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ধারণক্ষমতার তিন গুণ বেশি বন্দী কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধারণক্ষমতার তিন গুণ বেশি বন্দী কারাগারে

ড. মিজানুর রহমান

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ধারণক্ষমতার তিন গুণ বেশি বন্দী। এত বন্দী থাকলে তাদের কতটা সেবা দেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। গতকাল সকালে কারাগার পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কারাগারে বন্দীর ধারণক্ষমতা রয়েছে ২ হাজার ৬৮২ জন। আর বন্দী রয়েছেন ৭ হাজার ৩২৮ জন, যা তিন গুণেরও বেশি। মাত্র এক  মাস পরই কারাগারটি কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরিত হচ্ছে। এ কারণে বন্দীদের ওপর এর প্রভাব ফেলছে। কারাগারের বন্দীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি কারাগারে বন্দীসেবার মান নিশ্চিত করার জন্যও সুপারিশ করেন। মিজানুর রহমান বলেন, বন্দীদের চালান দেওয়া যেন বাণিজ্যে রূপান্তরিত না হয়, সে বিষয়টি কর্তৃপক্ষ নজরে আনবে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে কোনো বন্দীকে যেন নরকযন্ত্রণায় না রাখা হয়। কারাগারের ভিতরে অবস্থিত হাসপাতালের চিত্র দেখে তিনি আহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পুলিশের দেশজুড়ে সাঁড়াশি অভিযানে নিরীহ, নির্দোষ ও সাধারণ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়। ক্রসফায়ার বা বিনা বিচারে মৃত্যুর বিরুদ্ধে মানবাধিকার কমিশন সব সময় সোচ্চার রয়েছে। যে কোনো ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মানবাধিকারের লঙ্ঘন। আদালত জামিন দেওয়ার পরও কারাগার থেকে যদি মুক্তি দেওয়া না হয় তবে তা মানবাধিকার লঙ্ঘন। তিনি বলেন, সারা দেশে ৫৭৬ জন বন্দী সাজাভোগ শেষে জামিন পেলেও তারা বন্দী রয়েছেন। পুলিশের গ্রেফতার-বাণিজ্য নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করায় সম্প্রতি মিজানুর রহমানের সমালোচনা করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জিজ্ঞেস করলেই হুট করে কথা বলে ফেলেন। তিনি তথ্য না নিয়ে, না বুঝে, না শুনে মন্তব্য করে ফেলেন। ওই সমালোচনার জবাবে মিজানুর রহমান বলেন, আইজিপি অনভিপ্রেত ও অশোভনীয় মন্তব্য করেছেন। আমি হয়তো না বুঝে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তো আর না বুঝে সাবধানবাণী উচ্চারণ করেননি। সারা দেশের কারাগারে ৭৩ হাজারের অধিক বন্দীর জন্য মাত্র সাতজন চিকিৎসক রয়েছেন— এমন প্রশ্নে মিজানুর রহমান বলেন, কারাগারে অনেক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা একান্ত জরুরি। সব বন্দী যেন কারাগার থেকে চিকিৎসাসেবা পেতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে। এদিকে, মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যানের বক্তব্যের পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, ১৭৭৮ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের যাত্রা শুরু। ভিতরের স্থাপনাগুলো জরাজীর্ণ। এটা চিন্তা করেই সরকার কেরানীগঞ্জে অত্যাধুনিক কারাগার স্থাপন করেছে। আগামী ১৫-১৬ জুলাইয়ের মধ্যে কেরানীগঞ্জ কারাগারে সবকিছু স্থানান্তর করা হবে। ইতিমধ্যে কারাগারের ৫৫০ জন নারী বন্দীর মধ্যে ৩৭৬ জনকে কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর