রবিবার, ১৯ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

উত্তরার খালে অস্ত্রভাণ্ডার

১০৮ পিস্তল, ৪৫২ ম্যাগাজিন, ১০ বেয়নেট ও হাজার রাউন্ড গুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক

উত্তরার খালে অস্ত্রভাণ্ডার

রাজধানীর উত্তরার ১৬ নম্বর সেক্টরে বৌদ্ধ মন্দিরের পাশের খাল থেকে গতকাল বিপুল অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয়েছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ১০৮টি চাইনিজ পিস্তল, ১৮৯টি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২৬৩টি এসএমজির  ম্যাগাজিন, ১০টি বেয়নেট ও ১ হাজার ৬০ রাউন্ড গুলি। অস্ত্র ও গুলি ৮টি কাপড়ের ব্যাগে ছিল।

তুরাগ থানার তথ্যের ভিত্তিতে দমকল বাহিনীর ডুবুরিরা গতকাল বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে খালের পানির নিচ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেন। আজ আবার অভিযান চালাবেন তারা। র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ জানান, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বৌদ্ধ মন্দিরের পাশের খালি জায়গায় এক কনস্টেবল হাঁটাহাঁটি করছিলেন। এ সময় তিনি একটি পিকআপ থেকে খালের মধ্যে কার্টন ফেলতে দেখেন। প্রাথমিকভাবে খালে লাশ ফেলা হচ্ছে বলে তার সন্দেহ হয়। পরে ওই কনস্টেবল থানায় খবর দিলে বাড়তি পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় পাওয়া যায় একটি ট্রাভেল ব্যাগ। পরে ফেলে দেওয়া কার্টন তুলতে খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে। সেখানে যোগ দেয় অন্যান্য বাহিনীও।

দমকল বাহিনীর মহাপরিচলক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান জানিয়েছেন, তুরাগ থানার তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ঢাকা ও গাজীপুরের ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ও অন্য কর্মকর্তারা অভিযানে অংশ নিয়েছেন। বিকাল ৫টায় ডুবুরিরা অভিযান শুরু করেন। রাত সোয়া ৯টায় অভিযান স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এ সময় মূল সড়কে সব ধরনের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। গণমাধ্যমকর্মীদেরও ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে স্থানীয় থানা পুলিশ অভিযানে অংশ নেয়। তিনি জানান, আজ সকাল ৯টায় পুনরায় অভিযান শুরু করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

পেছনে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত : পুলিশ বলছে, এ অস্ত্রগুলো আনার পেছনে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় চক্রান্ত থাকতে পারে। পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার বিধান ত্রিপুরা সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিকাল ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে কালো রঙের একটি পাজেরো গাড়িতে করে এসে কেউ এ ব্যাগগুলো খালে ফেলে যায়। পুলিশ নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে এটা জানতে পেরে অভিযান চালায়। গাড়িটির কোনো নম্বর প্লেট ছিল না। অস্ত্রগুলো সম্পর্কে বিধান ত্রিপুরা বলেন, এগুলোর গায়ে উৎপাদনকারী দেশের নাম উল্লেখ নেই। তবে অস্ত্রগুলো নতুন। এখনো ব্যবহার করা হয়নি। সাঁড়াশি অভিযান ও পুলিশের নানামুখী তত্পরতার কারণে দুর্বৃত্তরা অস্ত্রগুলো ফেলে যেতে বাধ্য হয়েছে। এ অস্ত্রগুলো আনার পেছনে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় চক্রান্ত থাকতে পারে। ‘ওই সড়কে চেকপোস্ট ফাঁকি দিয়ে কীভাবে নম্বরবিহীন একটি গাড়িতে করে এসে কেউ অস্ত্র ফেলে গেল’— এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।

সর্বশেষ খবর