সোমবার, ২০ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

উত্তরার খালে মিলল আরও ৩২ ম্যাগাজিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টর দিয়াবাড়ীর খাল থেকে এসএমজির আরও ৩২টি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি দল একটি বাক্সের ভেতর এগুলো পায়। এর আগে গত শনিবার ডুবরি দল ওই খালে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে।

পুলিশ বলছে, কয়েক দিন আগে শেষ হওয়া দেশজুড়ে সাঁড়াশি অভিযানের কারণে সন্ত্রাসীরা ভয়ে এগুলো ফেলে গেছে। এই অস্ত্রগুলো আনার পেছনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। উদ্ধারকৃত অস্ত্র-গুলি নতুন ও অব্যবহৃত এবং প্যাকেট করা ছিল। এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই খালে দ্বিতীয় দিনের অভিযান চলছিল। দুদিনে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও গুলির মধ্যে রয়েছে ৯৫টি চায়নিজ ৭ দশমিক ৬২ (মি.মি) বোরের পিস্তল, দুটি দেশি ৭ দশমিক ৬২ (মি.মি) বোরের পিস্তল, ১৮৯টি ৭ দশমিক ৬৫ (মি.মি) পিস্তলের ম্যাগাজিন, ১০টি গ্লোপ পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২৯৫টি এসএমজির ম্যাগাজিন, ২২০ রাউন্ড ৭ দশমিক ৬৫ (মি.মি) বোরের পিস্তলের গুলি, ৮৪০ রাউন্ড ৯ এমএম পিস্তলের গুলি, ১০টি বেয়নেট, গুলি তৈরির ১০৪টি ছাঁচ, ১৯টি অস্ত্রের বাঁট পরিষ্কার করার যন্ত্র। ৮টি ট্রাভেল ব্যাগ ও একটি বাক্সের মধ্যে এগুলো ছিল। গতকাল সকালে দিয়াবাড়ীর ওই খালে অস্ত্র-গুলি উদ্ধারের সচিত্র প্রতিবেদন সংগ্রহ করতে বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা ছুটে যান। কিন্তু ঘটনাস্থলে ভিড়তে দেয়নি পুলিশ। তারা ঘটনাস্থলে যাওয়ার তিনটি পথই আটকে রাখে। পরে গণমাধ্যম কর্মীরা বেড়িবাঁধে অবস্থান নেন। সেখান থেকে সংবাদ সংগ্রহ করেন। জানা গেছে, সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি দলের সাতজন সদস্য অস্ত্র-গুলি উদ্ধারের অভিযানে দিয়াবাড়ীর খালে নামেন। ১১টার দিকে তারা একটি বাক্স পান। এতে ৩২টি এসএমজির ম্যাগাজিন পাওয়া যায়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। এ সময় তার সঙ্গে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মুহাম্মদ মারুফ হাসান, যুগ্ম-কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় ও উত্তরা বিভাগের ডিসি বিধান ত্রিপুরাসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসেন। আইজিপি ঘটনাস্থলে এলেও কোনো সাংবাদিক এগিয়ে যাননি। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চলে যান তুরাগ থানায়। সেখানে আইজিপি সাংবাদিকদের বলেন, কোনো সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র নাশকতার উদ্দেশ্যে এসব অস্ত্র এনে থাকতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে ভীত হয়ে একটি গোষ্ঠী এসব অস্ত্র ফেলে যেতে পারে। খুব দ্রুতই গোয়েন্দারা এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করবে। এর পেছনের হোতারা দ্রুতই দৃশ্যমান হবে। শনিবার রাতে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছিলেন, চলমান অভিযানের ফলশ্রুতিতেই সন্ত্রাসীরা ভয়ে নির্জন এলাকায় অস্ত্র-গুলি ফেলে গেছে। যারা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করতে চায়, জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চায়, তারাই এর সঙ্গে জড়িত। অস্ত্রের মালিক ও প্রশ্রয়দাতা কারা— তা জানতে তদন্ত করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর