মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

বড় নাশকতা ঠেকানো গেছে : ডিএমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ি এলাকায় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের মাধ্যমে দেশে বড় ধরনের নাশকতা পরিকল্পনা ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে কোনো কিছু আড়ালে করা হয়নি, আমরা আমাদের কাজের স্বচ্ছতা শতভাগ রক্ষা করেছি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। ডিএমপি কমিশনার বলেন, অস্ত্রগুলো দেশে কিভাবে আসল? কারাই বা অস্ত্রগুলো দিয়াবাড়ির খালে ফেলে গেছে এবং এর পরিকল্পনাকারী কারা তা খুঁজে বের করতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে আমাদেরই এক পুলিশ সদস্যের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বিপুল পরিমাণ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তিনি মনে করেছিলেন, কেউ হয়তো লাশ ফেলে গেছে সেখান। সাম্প্রতিক বিশেষ অভিযান, অপরাধ দমনে নিয়মিত পুলিশিং-টহল এবং চেকপোস্টের কারণেই নাশকতাকারীরা সফল হতে পারেনি। তল্লাশির সময় গণমাধ্যম কর্মীদের ওই এলাকা থেকে দূরে রাখা হয়েছিল কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, ১৮ তারিখ রাতে আমি নিজে ওখানে ছিলাম। ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার অনেক সাংবাদিকের সঙ্গে আমি কিন্তু ওখানে অবস্থান করেছি। পরদিন যখন পুরো এলাকায় তল্লাশি চালানো হলো তখন সাংবাদিকদের দূরে থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আগেরদিন যখন মূল উদ্ধার কাজ চলে তখন সাংবাদিক এবং আমরা পাশাপাশি থেকেই কিন্তু উদ্ধার কাজ অবলোকন করেছি। ১৯ তারিখে সংবাদকর্মীদের দূরে রাখা হয়েছিল এ কারণে যাতে তল্লাশি কার্যটা ব্যাহত না হয়। তবু সেটিও কিন্তু টেলিভিশনে লাইভ দেখা গেছে। কারণ মিরপুর বেড়িবাঁধ থেকে এলাকাটি খুবই কাছে। দূর থেকে জুম দিয়ে এটি লাইভ করা সম্ভব ছিল। কোনো কিছু আড়ালে করা হয়নি, আমরা আমাদের কাজের স্বচ্ছতা কিন্তু শতভাগ মেইনটেইন করেছি। ভবিষ্যতেও করব। কমিশনার বলেন, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো একেবারেই নতুন। তবে পানির মধ্যে ফেলার কারণে তাতে রাস্ট পড়েছে। স্টিল বা লোহা যখন আপনি পানির মধ্যে ফেলবেন তখন তাতে রাস্ট পড়বেই। এটাকে একটু ঘষে দেখলেই দেখা যাবে অস্ত্রগুলো একদম নতুন। অস্ত্রগুলো কোথাকার তৈরি তাও লেখা নেই, অস্ত্রগুলোর গায়ে সিরিয়াল নাম্বার ছাড়া লট নাম্বারও নেই। তবে বড় ধরনের নাশকতার জন্যই অস্ত্রগুলো দিয়াবাড়ির খালে ফেলে রাখা হয়েছিল এটা নিশ্চিত। মহানগর পুলিশ প্রধান বলেন, এটা কোনো সাধারণ অপরাধীদের কাজ নয়। যারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছিল, নারী-শিশুদের পুড়িয়ে হত্যা করেছিল এটা তাদেরই কাজ হতে পারে। অতীতে এ ধরনের যে সব নাশকতার ঘটনা ঘটেছে, ২০১৩—১৪ সাল এবং ২০১৫ সালের প্রথম ৯২ দিনে যে সহিংসতা, নজিরবিহীন তাণ্ডব আমরা দেখেছি সেগুলো কিন্তু আমরা কঠোরভাবে দমন করেছি। যারা এগুলো করেছে এটাও তাদের কাজই হতে পারে। কালো রঙের নামা্বরবিহীন গাড়িটি অস্ত্র নিয়ে চেকপোস্ট এলাকা পার হয়ে কিভাবে ঘটনাস্থলে গেল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চেকপোস্ট পার হয়ে গাড়িটি আসার  কোনো প্রশ্নই উঠেনা। আমাদের ধারণা কোনো এক সময় অস্ত্রগুলো উত্তরাতে আনা হয়েছিল এবং উত্তরার ভিতর দিক থেকেই গাড়িটা এসে এখানে অস্ত্রগুলো ডাম্পিং করে গেছে।

সর্বশেষ খবর