জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছেন, বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে গোটা জাতিকে ভাবিয়ে তুলছে। এই নাজুক পরিস্থিতি দেশের কোনো নাগরিকের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এর পেছনে হয়তো বিশাল নীল নকশা কাজ করছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বৃহত্তর ঐক্যের প্রয়োজন। একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি যদি অপেক্ষমাণ হয় সেটি কারও জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। এখনই সন্ত্রাস নৈরাজ্যের মূলোৎপাটন করা উচিত। ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সাবেক এ মন্ত্রী জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা, মন্ত্রী পরিষদে জাতীয় পার্টির থাকা না থাকাসহ নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন।
রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, পুলিশ প্রশাসনের পাশে আমাদের থাকতে হবে। তাদের কিংবা তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবন বিপন্ন হলে বসে থাকা ঠিক নয়। তিনি বলেন, অপরাধী যেই হোক না কেন কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। তবে নিরপরাধ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অপরাধী দমনের নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা হলে তা হবে দুঃখজনক। রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের জনপ্রিয়তা এবং নেতা-কর্মীদের আন্তরিক সহযোগিতায় সফলভাবে পার্টির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ অনেক জেল-জুলম অত্যাচার সহ্য করে জাতীয় পার্টিকে আজ এ অবস্থানে এনেছেন। এ জন্য দলের সব নেতা-কর্মীর পক্ষ থেকে দলের চেয়ারম্যানের প্রতি কৃতজ্ঞতা। সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, দলের সুবিধাভোগী একটি অংশ নিজেদের আখের গোছাতে একাধিক দলে চাটুকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। তারা যদি আদর্শচ্যুত না হতো তাহলে এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি কয়েকবার ক্ষমতায় আসত। তবে হতাশার কিছু নেই। আশার আলো জ্বলছে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ আজও বলে আমরা এরশাদকে ভালোবাসি। জাতীয় পার্টির শাসনামলে সুখে ছিলাম, নিরাপদে ছিলাম। জাতীয় পার্টিকে আগামীতে ক্ষমতায় বসাতে সমর্থন দেব। ইউপি নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচন পদ্ধতিই ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত। স্থানীয় সরকারের নির্বাচন পদ্ধতিতে বহু ত্রুটি পরিলক্ষিত। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এত জীবন অকাতরে যেত না। ক্ষমতার প্রতিযোগিতায় আর কত জীবন দেবে মানুষ? সবারই উচিত বর্তমান থেকে শিক্ষা নেওয়া। জাতীয় পার্টি সরকারে আরও মন্ত্রী চায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে দল এবং জনগণের স্বার্থ বড়। কে মন্ত্রী হলো এটি বিচার্য নয়। মন্ত্রিপরিষদ ছাড়ার জন্য তৃণমূল থেকে চাপ আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, মন্ত্রিপরিষদ ছাড়ার পক্ষে-বিপক্ষে মত রয়েছে। এ ব্যাপারে পার্টির চেয়ারম্যানকে একক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সময়মতো তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।