শনিবার, ২৫ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

কে হচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক

আওয়ামী লীগের সম্মেলন

শাবান মাহমুদ

কে হচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কি টানা তৃতীয়বারের মতো আসীন হচ্ছেন নাকি নতুন মুখ আসছে— এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র কৌতূহল। দলের শীর্ষস্থানীয় একাধিক সূত্রমতে, এবার সাধারণ সম্পাদকের পদে পরিবর্তন আসছে। বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন না উঠলেও দলকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ হিসেবেই সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তনের সম্ভাবনা ক্রমে প্রবল হয়ে উঠছে। দলের মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও এ পদে পরিবর্তন চাইছেন। অনেকের অভিমত, সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে গেল প্রায় ৮ বছরে মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের একটি দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। দলের নীতিনির্ধারকরাও মনে করছেন, ২০১৯ সালে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংগঠনে সার্বক্ষণিক সময় দিতে পারেন এমন একজন নেতাকে এখন সাধারণ সম্পাদক করা প্রয়োজন। সূত্রমতে, তাই একজন যোগ্য ও বিশ্বস্ত নেতাকে খুঁজছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সাধারণ সম্পাদক পদে ‘নতুন’ যিনি আসছেন তাকে নিয়ে কর্মীদের নানান রকমের বিশ্লেষণ থাকলেও এ মুহূর্তে আলোচনার কেন্দ্রে মূলত তিন নেতা। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের, কাজী জাফরুল্লাহ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। তবে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাকের নামও উঠে আসছে আলোচনায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন প্রবীণ নেতা ও উপদেষ্টা অবশ্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, সাধারণ সম্পাদক পদে বড় ধরনের ‘চমক’ থাকতে পারে। সেই চমক হিসেবে আলোচনার বাইরে থাকা কোনো নেতার কপাল খুলতে পারে। সূত্রমতে, তিনটি বিশেষ কারণে আওয়ামী লীগের আসন্ন কাউন্সিলকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। প্রথমত দলকে ঢেলে সাজাতেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে মূল পরিবর্তন। দ্বিতীয়ত, আগামী জাতীয় নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দলকে প্রস্তুত রাখতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি কমিটি উপহার এবং তৃতীয়ত, পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবেও দলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে মেধাবী ও পরিশ্রমী নেতাদের সমন্বয়ে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন। দলীয় সূত্রমতে, সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভাব্য পরিবর্তনকে ঘিরেই হঠাৎ কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের তারিখ পরিবর্তন করা হয়। প্রায় চার মাস পর অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলকে ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীদের আগ্রহ বেড়েই চলেছে। দলের কেন্দ্রীয় কাঠামোয় আমূল পরিবর্তনের সম্ভাবনা থাকলেও দলীয় নেতা-কর্মীদের মূল আগ্রহ সাধারণ সম্পাদক পদকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রমতে, দক্ষ, মেধাবী, পরিশ্রমী, পরীক্ষিত ও বিশ্বস্ত নেতা হিসেবে সম্ভাব্য সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের এ মুহূর্তে ব্যাপক আলোচিত। শেষ পর্যন্ত তিনি হতে পারেন মূল প্রার্থী এমন আলোচনাও রয়েছে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মধ্যে। ছাত্রলীগের সাবেক সফল সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকও শেখ হাসিনার একান্ত বিশ্বস্ত। প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহকে নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন সম্ভাবনা। আর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতার অন্যতম ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর ছেলে হিসেবে মোহাম্মদ নাসিমও হতে পারেন চমকের প্রার্থী। এর বাইরেও একজন নেতার নাম আলোচনা হচ্ছে। যিনি একসময় নেত্রীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এখন আবার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখছেন। মোহাম্মদ নাসিম ১৪ দলে বেশি সময় দিলেও শারীরিক কারণে তার নাম অন্যদের চেয়ে কম আলোচনায়। তিন বছরের মেয়াদে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল হয় ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর। নির্ধারিত মেয়াদের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও ইতিমধ্যেই কাউন্সিলের তারিখ দুই দফা পিছিয়ে যায়। অক্টোবরের ২২ ও ২৩ তারিখ নির্ধারিত কেন্দ্রীয় কাউন্সিল যথাসময়ে হবে কিনা, সে বিষয়েও কর্মীদের সংশয় কাটছে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর