কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলে আসা বিরোধের জের ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাসদ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধসহ ছয়জন আহত হয়েছেন। গতকাল সকাল ৮টার দিকে উপজেলার চাঁদগ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পূর্ববিরোধের জের ধরে জাসদ সমর্থিত মিনাজুর রহমান পক্ষ ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাবেক ইউপি সদস্য এনামুল হক পক্ষের লোকজনের মধ্যে সকালে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে উভয় পক্ষ। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের অন্তত ছয়জন আহত হন। তাদের চারজনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলেন জাসদ সমর্থিত সাইফুল প্রামাণিক (২৮) ও আফিল মালিথা (৩০) এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত হাফিজুর রহমান (৩২) ও সোহাগ হোসেন (২৩)। এর মধ্যে সোহাগের বাঁ পায়ের ঊরুতে গুলি লেগেছে। বাকিরা গ্রেফতার এড়াতে পৃথক স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাদিয়া জাহান বলেন, সোহাগের বাঁ পায়ের ঊরুতে গুলি লেগেছে। চিকিৎসাধীন সোহাগ হোসেন বলেন, ঘটনার সময় তিনি রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে প্রায় ৪০ ফুট দূর থেকে জাসদের কয়েকজন লোক তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আকতারুজ্জামান মিঠু বলেন, ‘ওই গ্রামে বেশ কয়েক দিন ধরে কয়েকবার আওয়ামী লীগ ও জাসদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। বিষয়টি পুলিশ দেখছে।’ তবে উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী এ ঘটনাকে দলীয় সংঘর্ষ বলতে নারাজ। তার দাবি, ‘ওই গ্রামে ৬৭ বছর ধরে বংশগত দ্বন্দ্বে মারামারি হয়ে আসছে। এর মধ্যে উভয় পক্ষেই আওয়ামী লীগ, জাসদ ও বিএনপির লোকজন আছেন। এখানে আওয়ামী লীগ ও জাসদের মধ্যে কোনো মারামারি হয়নি।’ ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর হোসেন খন্দকার বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৪০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। আপাতত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত বছর ৬ নভেম্বর চাঁদগ্রামে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের হামলায় বাবুল ড্রাইভার নামে এক জাসদ কর্মী নিহত হওয়ার পর থেকে সেখানে দুই পক্ষের লোকজন মাঝে-মধ্যেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। সর্বশেষ সোমবার দুই পক্ষের সংঘর্ষে আটজন আহত হন।
