শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ক্ষমতায় গেলে গুম-খুনে জড়িত র‌্যাব-পুলিশের বিচার হবে : খালেদা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতায় গেলে গুম-খুনে জড়িত র‌্যাব-পুলিশের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, দেশে গণতান্ত্রিক অবস্থা ফিরে এলে আমরা অবশ্যই গুম হওয়া ব্যক্তিদের খোঁজ করার চেষ্টা করব। র‌্যাব-পুলিশের মধ্যে যারা এই অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত তাদের কোনো দিন ক্ষমা করা হবে না। তাদের    বিচার একদিন না একদিন হবেই। স্বজনকে ফিরে পেতে না পারি, কিন্তু বিচারটা পেলেও কিছুটা শান্তি হবে। এই আশাই করি। খালেদা জিয়া গতকাল গুলশানের একটি হোটেলে বিএনপির গুম ও খুন হওয়া নেতা-কর্মীদের পরিবার ও স্বজনদের সম্মানে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে বক্তৃতা করছিলেন। ইফতার মাহফিলে গুম হওয়া ৪৫টি পরিবারের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্যের শুরুতেই খালেদা জিয়ার চোখ অশ্রুসজল দেখা যায়। তিনি এ সময় আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, আপনারা যারা এখনো নিজেদের স্বজনদের আশা করেন, তারা ফিরে আসবে। তারা হয় তো আছে কোথাও। আমরাও সেই আশা নিয়ে বসে আছি। তারা হয় তো একদিন আমাদের মধ্যে ফিরে আসবে। আবার আপনাদের যেমন মা-বাবা, ভাই-বোন বলে ডাকবে। আপনাদের শ্রদ্ধা, সম্মান ও আদর করবে। তেমনিভাবে দলের মধ্যে সব  নেতা-কর্মীর মধ্যে আমাদের মধ্যে আপন হয়ে থাকবে।

খালেদা জিয়া বলেন, ওরা দল করেছে। কিন্তু ওরা আপনাদের  যেমন বাবা-মা জানে, তেমনি আমাকেও মায়ের মতোই  দেখেছে। তাই আজকে সন্তানহারার ব্যথা কী, তা আমি বুঝতে পারছি। আমি নিজেও বুঝি। আপনারা দেখেছেন, আমার ছোট ছেলেকেও আমি হারিয়েছি।

ক্রসফায়ারের সমালোচনা করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্তানহারার ব্যথা আমি জানি। মা-বাবার কি যে ব্যথা তা আমিও বুঝি। তার ওপর যদি দেখেন ক্রসফায়ার হচ্ছে, সেটা আরও দুঃখজনক। একটা নিরীহ ছেলেকে গুলি করে মেরে ফেলা হলো। কথা নেই, বার্তা নেই, তাকে মেরে ফেলা হলো। এটা মেনে  নেওয়া যায় না। দীর্ঘদিন জেল সহ্য করা যায়, বা বিচার হবে, বিচার ছাড়া অন্যায়ভাবে গুলি করে মেরে  ফেলবে? এটা কখনো হয় না।

সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি প্রধান বলেন, এ সরকার জালিম ও খুনি। এরা গুপ্তহত্যাকারী। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করব  যেন এদের বিচার হয়। বিচার যেন খুব শিগগিরই করে। দুনিয়াতে করে, যাতে মানুষ দেখে যেতে পারে। এমন বিচার হয় যেন ভবিষ্যতে এমন কাজ কেউ না করে।

ইফতার মাহফিলে বংশাল এলাকার বিএনপির কর্মী পারভেজ  হোসেনের কন্যা হৃদি হোসেন বলেন, আমার বাবার ছবি গলায় দিয়ে আর ভালো লাগে না। আমি বাবার হাত ধরে হাঁটতে চাই। আমার বাবাকে ফিরিয়ে দাও। বাবাকে ছাড়া ঈদ করতে ভালো লাগে না। গুম হওয়ার এক নেতার ছোট ছেলে আহাদ বলেন, আমি চাই, আমার বাবা আমার হাত ধরে স্কুলে নিয়ে যাবে।

ইফতার মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর