রবিবার, ৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা
সেনাসদরের ব্রিফিং

ধারালো অস্ত্রে ২০ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে যৌথ বাহিনীর কমান্ডো অভিযানে ছয় বন্দুকধারী মারা পড়লেও তার আগে তারা ২০ জিম্মিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরে অভিযান চালিয়ে একজন জাপানি, দুজন শ্রীলঙ্কান নাগরিকসহ মোট ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে ছয় হামলাকারী নিহত ও একজনকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল সকালে কমান্ডো অভিযানের পর দুপুরে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী এই তথ্য জানান। সেনা সদর অফিসার্স মেসে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. এম এম ইমরুল হাসান, ৪৬ ইনফ্রেন্টি ব্রিগেড কমান্ডার মুজিবুর রহমান ও বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাবের মিডিয়া সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা।  শুক্রবার রাতে গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বরে সড়কের রেস্টুরেন্টটিতে বন্দুকধারীরা হামলা চালালে রাতভর ক্যাফেটি পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ঘিরে রাখার পর সকালে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা যুক্ত হয়ে কমান্ডো অভিযান শুরু করে। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাবের সদস্যদের নিয়ে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ নামের সমন্বিত এই অভিযান সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে শুরু হয়ে সাড়ে ৮টায় শেষ হয় বলে জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী।

তিনি বলেন, প্যারা কমান্ডোরা ৭টা ৪০ মিনিটে অপারেশন শুরু করে, ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মধ্যে সব সন্ত্রাসীকে নির্মূল করে টার্গেট এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। পরে সকাল সাড়ে ৮টায় অভিযানের সফল সমাপ্তি ঘটে। এরপর তল্লাশি চালিয়ে ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এদের সবাইকে রাতেই হত্যা করা হয়। ধারালো অস্ত্রের মাধ্যমে নৃশংসভাবে তাদের হত্যা করা হয়। মৃতদেহগুলোকে প্রচলিত নিয়ম মেনেই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে।

অভিযান চালিয়ে একজন জাপানি, দুজন শ্রীলঙ্কান নাগরিকসহ মোট ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়। অভিযানে ছয় হামলাকারী নিহত ও একজনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, অভিযানে সন্ত্রাসীদের ব্যবহূত চারটি পিস্তল, একটি ফোল্ডেড বাট একে ২২, চারটি অবিস্ফোরিত আইইডি, একটি ওয়াকিটকি ও ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী বলেন, শুক্রবার রাতের অপারেশনে অংশ নিয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তা শাহাদাতবরণ করেন। তারা সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলায় অংশ নেন। এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন তিনি। এ ছাড়া চূড়ান্ত অভিযান চলাকালে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেওয়ার জন্য এই অভিযানে অংশগ্রহণকারী সব বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক।

সর্বশেষ খবর