সোমবার, ১১ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা
হিজবুল নেতার মৃত্যু

রণক্ষেত্র কাশ্মীর নিহত বেড়ে ২০

কলকাতা প্রতিনিধি

পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হিজবুল মুজাহিদীন নেতা আবদুল বুরহান ওয়ানি (২১) নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ভারতের জম্মু-কাশ্মীর। কাশ্মীর উপত্যকা জুড়ে জারি করা কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে ২০ জন। শনিবারের পর গতকাল সকাল থেকেই ফের সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে গোটা উপত্যকায়। দফায় দফায় চলে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ। অনন্তনাগে পুলিশের  একটি বুলেটপ্রুফ গাড়িকে ঝিলাম নদীতে ফেলে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এ সময় গাড়ির মধ্যে থাকা চালক ও এক কনস্টেবলও নদীতে পড়ে যান। নদীতে পড়ে মৃত্যু হয় এক পুলিশ সদস্যের। পুলওয়ামাতে রাস্তায় নেমে রাষ্ট্রবিরোধী ও স্বাধীনতার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে পুলিশও গুলি চালায়। এতে আহত হন দুই শতাধিক ব্যক্তি, যার মধ্যে শতাধিক পুলিশ সদস্য রয়েছেন। এদিকে উপত্যকায় সহিংসতার কারণে রাজ্যের সাধারণ জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সহিংসতার আশঙ্কায় দোকানপাট, বেসরকারি অফিস, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, পেট্রলপাম্প সবকিছুই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি অফিস ও ব্যাংকগুলোতেও উপস্থিতির সংখ্যা কম। সহিংসতায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতি রাজ্যবাসীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কাশ্মীরের কোকরনাগ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে নিহত হন হিজবুল নেতা ওয়ানি। সেনাবাহিনীর মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি তালিকায় ছিলেন তিনি। রাজ্য সরকার ওয়ানির মাথার দাম ঘোষণা করেছিল ১০ লাখ রুপি। ওয়ানির নিহত হওয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার রাত থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ওই দিন রাত থেকেই একাধিক জায়গায় জারি করা হয় কারফিউ। সতর্কতার অংশ হিসেবে কাশ্মীর উপত্যকায় ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে অমরনাথ যাত্রা। হরতালের ডাক দেওয়া কট্টরপন্থি নেতাদেরও গৃহবন্দী করে রাখা হয়। কিন্তু শনিবার কারফিউ উপেক্ষা করে হিজবুল নেতা ওয়ানির মরদেহ নিয়ে রাস্তায় নামে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইট-পাথর নিক্ষেপ। গতকাল পুলিশের তিনটি কার্যালয়সহ পাঁচটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। গতকাল সকাল থেকে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।

সর্বশেষ খবর