ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে প্রধান বিচারপতি পদে সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন দিয়েছে নেপালের পার্লামেন্টারি হিয়ারিং স্পেশাল কমিটি। রবিবার কমিটির পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয় বলে কাঠমান্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ৬৪ বছর বয়সী সুশীলা নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি হিসেবে মনোনয়ন পেলেন। এর মধ্য দিয়ে দেশটির তিন বিভাগের প্রধান হিসেবে নারীরা দায়িত্ব পাচ্ছেন বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। নেপালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি ২০১৫ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দেশটির সংসদের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অনসারি ঘার্তি মাগার। কয়েক দিনের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে সুশীলাকে শপথ পড়াবেন বলে ধারণা করছে হিমালয়ান টাইমস। এর পর থেকে ২০১৭ সালের ৬ জুন পর্যন্ত সুশীলা নেপালের বিচার বিভাগকে নেতৃত্ব দেবেন বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি। চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল প্রধান বিচারপতির পদ থেকে কল্যাণ শ্রেষ্ঠ অবসর নেওয়ায় জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সুশীলাকে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এপ্রিলেই সুশীলাকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে সুপারিশ করেছিল সাংবিধানিক কাউন্সিল। কিন্তু তার ?বিরুদ্ধে সম্পদ নিয়ে লুকোছাপা ও ‘দলীয় সংযোগ’সহ ছয়টি অভিযোগ আনেন আইনজীবী স্বপ্না মাল্লা প্রধান। অভিযোগে তিনি বলেন, সুশীলা একসময় কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল—ইউএমএলের সংসদ সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া নেপালের বিরাটনগরে থাকা সম্পদের বিষয়টি লুকিয়েছেন এই বিচারপতি। সেসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সংসদীয় বিশেষ প্যানেল এনপিএইচএসসিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। রবিবার প্যানেলের সামনে সুশীলা সব অভিযোগের ‘সন্তোষজনক জবাব’ দিয়েছেন বলে কাঠমান্ডু পোস্টকে জানান এনপিএইচএসসির চেয়ারম্যান কুল বাহাদুর গুরুং। শুক্রবার একই প্যানেল আয়োদি প্রসাদ যাদবকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সর্বসম্মত মনোনয়ন দিয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কারণে সুপরিচিত সুশীলা ১৯৭৯ সালে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। বানারসের হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করা এই বিচারককে ২০০৯ সালে সুপ্রিমকোর্টে চুক্তিভিত্তিক বিচারক হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পরের বছর তার চাকরি স্থায়ী হয়। বিচারক থাকাকালে সাত বছরে মোট ৮ হাজার ৭৬৫টি মামলার রায় দিয়েছেন সুশীলা। এর মধ্যে আছে মায়ের পরিচয়ে সন্তানের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টিও। এর আগে কেবল বাবা নেপালের নাগরিক হলে সন্তানরা নেপালের নাগরিকত্ব পাওয়ার আবেদন করতে পারতেন। সুশীলার হাতে বিচারের জন্য আরও ৭৩৫টি মামলা রয়েছে।