বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

হলি আর্টিজানে সিসিটিভির ফুটেজ রেকর্ড হতো না

শুধু দেখা যেত কে আসছেন যাচ্ছেন

আনিস রহমান

হলি আর্টিজানে সিসিটিভির ফুটেজ রেকর্ড হতো না

গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারির ভিতরের সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড করার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। হামলার পর আর্টিজান থেকে জব্দ করা সিসিটিভি ক্যামেরা পরীক্ষা করে পুলিশ ও র‌্যাব এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। আর এ কারণে বিদেশিদের হত্যার সময় কার কী ভূমিকা ছিল তা জানতে পারেননি তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। মুক্তি পাওয়া ১৩ জন এবং আর্টিজানের প্রত্যক্ষদর্শী কর্মচারীর বক্তব্যই এখন তদন্তকারীদের মূল ভরসা।

জানা গেছে, গুলশান আক্রমণের পর হলি আর্টিজান থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করতে গিয়ে বিস্মিত হন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা। তারা দেখতে পান, ক্যামেরা আছে কিন্তু রেকর্ডার নেই। তখন হলি আর্টিজান মালিককে তারা বলেন, শুধু শুধু সিসি ক্যামেরা রেখে লাভ কী। তবে সন্তোষজনক কোনো জবাব  মেলেনি তার কাছ থেকে। বাইরের ফুটেজ পরীক্ষা করে তারা দেখতে পান, কী করে জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা হলি আর্টিজানে প্রবেশ করেছে। আরও জানা গেছে, জঙ্গিরা গাড়ি থেকে নেমে একে একে প্রবেশ করেন হলি আর্টিজানে। তাদের চলনে-বলনে ভাব ছিল, অতিথি হিসেবেই তারা খেতে এসেছেন। সবাই একত্র হয়ে তারা ‘আল্লাহ আকবার’ স্লোগান দিয়ে ভিতরে অবস্থানকারীদের জিম্মি ঘোষণা করেন। এর পরই আস্তে আস্তে শুরু হয় তাদের নিষ্ঠুর অ্যাকশন। পুরো অপারেশনের সময় জঙ্গিদের মনোভাব ছিল স্বাভাবিক। একের পর এক নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড চালানোর পরও কোনো মানসিক টেনশন তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন জানিয়েছেন, রোহান ইমতিয়াজ স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তা বলেছেন জীবিতদের সঙ্গে। সবচেয়ে বেশি পাগলাটে ছিলেন কনিষ্ঠ জঙ্গি মোবাশ্বির। তার আচরণে প্রকাশ পায় ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুরতা। বিদেশিদের তারা শুধু নৃশংসভাবে হত্যা করেননি, ভয়ঙ্করভাবে নির্যাতনও করেন। পোস্টমর্টেমে ইতালির নাগরিকদের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে, যা কোনো সুস্থ মানুষের কাজ হতে পারে না। প্রত্যেক জঙ্গির আচরণ ছিল ভয়ঙ্কর জন্তু-জানোয়ারের মতো। এদিকে পুলিশ ও বিভিন্ন সংস্থা গুলশান আক্রমণ নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। বিভিন্ন সূত্র সামনে রেখে কাজ করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। এখন বের করার চেষ্টা চলছে জঙ্গিরা গত ছয় মাস কোথায় ছিলেন এবং কারা তাদের আশ্রয়দাতা। সন্ধান পেলে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।

সর্বশেষ খবর