বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

যুদ্ধাপরাধীদের নামে বরাদ্দ প্লট বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুদ্ধাপরাধীদের নামে বরাদ্দ প্লট বাতিল

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সময় রাজউক থেকে যুদ্ধাপরাধীদের যেসব সরকারি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল— সেসব বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের যে প্লট দেওয়া হয়েছে ওগুলো বাতিল করা হয়েছে। সচিবালয়ে গতকাল এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী  এ কথা বলেন। প্রসঙ্গত, এর আগে সংসদীয় কমিটি নিজামীসহ যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সাজাপ্রাপ্তদের প্লট বাতিলের দাবি জানিয়েছিল। এ ছাড়া জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে গণপূর্তমন্ত্রীও জানিয়েছিলেন, রাজউকে যুদ্ধাপরাধীদের কোনো প্লট থাকলে ‘ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে। গতকাল গণপূর্তমন্ত্রী আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধী অনেকেই আছে, যাদের নামে প্লট আছে— সবগুলো আমরা নিয়ে নিচ্ছি। তবে যারা ডেভেলপারের মাধ্যমে প্লটে বাড়ি করেছেন, সেখানে ডেভেলপার ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।’ তিনি বলেন, ‘কোন কোন যুদ্ধাপরাধী, কারও নাম বলব না। একজন তার প্লট ডেভেলপারকে দিয়েছে। ডেভেলপারের তো কোনো দোষ নেই। ডেভেলপারের অংশ ডেভেলপার নিয়ে নেবে, বাকি অংশ আমরা নিয়ে নেব।’ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বনানী ঝিলপাড়ে জে ব্লকের ১৮ নম্বর সড়কের ৬০ নম্বর প্লটটি ‘রাষ্ট্রীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ’ বিএনপির নেতৃত্বাধীন সরকারের নির্দেশে ২০০৬ সালে জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামীকে বরাদ্দ দেয় রাজউক। এর আগে ১৯৯৫ সালে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য আজিজুর রহিমকে প্রবাসী কোটায় প্লটটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তিনি সরকারি কোষাগারে এ জন্য ৩ লাখ টাকাও জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু বরাদ্দ পাওয়ার ১০ বছর পর রাজউক আজিজুর রহিমের বরাদ্দ বাতিল করে প্লটটি নিজামীকে পুনঃবরাদ্দ দেয়। এ বিষয়ে বরাদ্দগ্রহীতা পূর্ত মন্ত্রণালয়ে সচিবের কাছে অভিযোগ করলে তদন্ত শুরু হয়। এ বিষয়ে গত ১৫ জুন জাতীয় সংসদে গণপূর্তমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে জামায়াতের বিভিন্ন নেতা, সাজাপ্রাপ্ত, অভিযোগে আটক চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের নামে রাজউক কর্তৃক প্লট বরাদ্দ প্রদান করা হয়ে থাকলে তা তদন্ত করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।’ পরে তদন্তে জানা যায়, ২০০৬ সালের ২১ মে রাজউকের বোর্ডসভায় আজিজুর রহিমের বরাদ্দ বাতিল করে পাঁচ কাঠার ওই প্লট তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিজামীকে দেওয়া হয়েছে। এ প্লটে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ‘মিশন’ সেখানে যে সুরম্য অট্টালিকা বানায় তার নাম রাখা হয় ‘মিশন নাহার’। নিজামীর স্ত্রী শামসুন নাহার নিজামী আর প্রতিষ্ঠানের নামে বাড়িটির নামকরণ করা হয়। উল্লেখ্য, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত ১০ মে মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর