শুক্রবার, ১৫ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

ব্রিটেনে নতুন অধ্যায়

ব্রেক্সিটের পক্ষের নেতারাই ঠাঁই পাচ্ছেন মন্ত্রিসভায়

প্রতিদিন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হয়েই নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটালেন টেরেসা মে। প্রথম দিনেই গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে এনেছেন পরিবর্তন। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস জনসন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে জর্জ ওসবর্নির স্থলাভিষিক্ত হলেন ফিলিপ হ্যামন্ড। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একজন নারীকে রেখেছেন। তার নাম আমবার রুড এবং ব্রেক্সিট প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন ডেভিড ডেভিস। গতকাল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে টেরেসা মে মন্ত্রিপরিষদে কয়েকটি পদে নতুন নিয়োগ দেন। দু-এক দিনের মধ্যে তিনি মন্ত্রিপরিষদ পুনর্গঠনের কাজ শেষ করবেন বলে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে। খবরে আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে ব্রেক্সিট সমর্থনকারীরা পুরস্কৃত হবেন। গুরুত্ব পাবেন নারীরাও।

নতুন মন্ত্রীসভার সদস্য হলেন যারা— চ্যান্সেলর বা অর্থমন্ত্রী : নতুন মন্ত্রিসভার চ্যান্সেলর হয়েছেন ফিলিপ হ্যামন্ড (৬০)। তিনি ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সদ্যবিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের মেয়াদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। এর আগে তিনি প্রতিরক্ষা ও পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী : নতুন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস জনসনকে (৫২)। ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষের প্রচারণায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। এবারই প্রথম মন্ত্রিসভার দায়িত্ব পেলেন তিনি। তবে তাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করায় বিশ্বের অনেক স্থানে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন অ্যাম্বার রুড (৫২)। এর আগে এই পদেই ছিলেন নির্বাচিত নতুন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। ডেভিড ক্যামেরনের জ্বালানি ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ব্রেক্সিট বিষয়কমন্ত্রী : ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ডেভিড ডেভিসকে (৬৭) ব্রেক্সিট বিষয়কমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কনজারভেটিভ পার্টির বয়োজ্যেষ্ঠ এই এমপি ২০০৫ সালে দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনে ডেভিড ক্যামেরনের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। তবে ব্রেক্সিটের পক্ষে ছিলেন তিনি। আর এই প্রচারণায় তার সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

বিচার : বিচারমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন একজন নারী। তিনি লিজ ট্রাচ।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী : আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন লিয়েম ফক্স (৫৪)। তিনি ২০১০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সব সময় ব্রেক্সিটের পক্ষে বেশ সোচ্চার থেকেছেন।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী : প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে মাইকেল ফ্যালনই (৬৪) দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি ২০১৪ সাল থেকেই এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কনজারভেটিভ দলের সাবেক ভাইস  চেয়ারম্যান ছিলেন। পরিবেশ, খাদ্য ও গ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী : এই পদে একজন নারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার নাম অ্যান্ড্রিয়া লিডসম।

কর্ম ও পেনশন : এই পদে নিয়োগ পেয়েছেন ডেমিয়ান গ্রিন। যোগাযোগ : এই পদে নিয়োগ পেয়েছেন ক্রিশ গ্রেলিং। পার্লামেন্ট নেতা বা হুইপ : হুইপ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বারোনেস নাটালি। তিনি একজন নারী। বাণিজ্য জ্বালানি ও শিল্প : এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন গ্রেক ক্লার্ক। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন : এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রীতি প্যাটেলকে। তিনি একজন নারী।  উত্তর আয়ারল্যান্ড বিষয়ক মন্ত্রী : এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জেমস ব্রোকেসশায়ারকে। এদিকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর টেরেসা মে বলেছেন, শুধু গুটি কয়েক সুবিধাভোগীর জন্য তিনি কাজ করবেন না বরং ধনী-গরিবের মধ্যে তফাত ঘোচাতে কাজ করবেন। তিনি তার ভাষণে পূর্বসূরিদের ব্যাপক প্রশংসায় ভাসান। এদিকে ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-কে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদসহ বিশ্বের অনেক নেতা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর