শুক্রবার, ১৫ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

গুলশান হামলায় যেভাবে প্রাণ বাঁচালেন ওতানাবে

প্রতিদিন ডেস্ক

গুলশান হামলায় যেভাবে প্রাণ বাঁচালেন ওতানাবে

আহত জাপানি নাগরিক

দুই সপ্তাহ আগে ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার মুখে পড়েছিলেন জাপানি নাগরিক তামকি ওতানাবে। সেদিন নিজের প্রাণ বাঁচিয়েছেন তিনি গাছের আড়ালে আত্মগোপন করে। ওই হামলায় প্রাণে বেঁচে গেলেও ছিটকে আসা গুলিতে আহত হন জাপানের আলমেক করপোরেশনের এই কর্মী। টোকিওর হাসপাতালে শুয়ে জাপান সরকারের করা তদন্ত কমিটিকে তিনি সেই রাতের বিবরণ দিয়েছেন, যা জাপানের সংবাদমাধ্যমেও এসেছে।

জাপান টাইমস লিখেছে, ওতানাবেসহ আট জাপানি নাগরিক ১ জুলাই সন্ধ্যায় অভিজাত এলাকা গুলশানে বিদেশিদের কাছে জনপ্রিয় ওই ক্যাফেতে গিয়েছিলেন রাতের খাবার খেতে। ওই আটজনের মধ্যে কেবল ওতানাবেই বেঁচে ফিরতে পেরেছেন।

জাপানের জাতীয় পুলিশ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওতানাবে বলেছেন, খেতে বসার পরপরই হঠাৎ গুলির শব্দে তিনি উঠে দৌড় দেন। সঙ্গে থাকা বন্ধুরাও ততক্ষণে ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছেন। হামলাকারীরা তখন এলোপাতাড়ি গুলি করছিল। ওই অবস্থার মধ্যে ওতানাবে বেকারি ভবনের বাইরে বেরিয়ে কম্পাউন্ডের ভিতর গাছের আড়ালে গিয়ে লুকান। এরপর সঙ্গে থাকা জাপানি বন্ধুদের আর কাউকে তিনি দেখতে পাননি। ৪৬ বছর বয়সী ওতানাবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এজেন্সির (জাইকা) অধীনে ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছিলেন। ক্যাফের বাগানে প্রাণহাতে রুদ্ধশ্বাস ১২টি ঘণ্টা কাটানোর পর ২ জুলাই ভোরে ওতানাবেসহ মোট ১৩ জিম্মিকে উদ্ধার করেন বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। গুলিবিদ্ধ ওতানাবে ঢাকায় চিকিৎসা নিয়ে ফিরে যান জাপানে। ৫ জুলাই জাপান সরকার তাকে টোকিও হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে জাপান টাইমস লিখেছে, বুধবার তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলার সময় ওতানাবেকে শান্ত দেখাচ্ছিল। তিনি বলেন, বেঁচে ফেরার কথা সে সময় তিনি ভাবতে পারেননি। চারদিকে গুলির শব্দ আর চিৎকারে তার কেবলই মনে হচ্ছিল, এই বুঝি সন্ত্রাসীরা ধরে ফেলবে। জাপানি পুলিশ বলছে, তাদের সাতজন নাগরিকের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে গুলিতে। অধিকাংশই মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। আর বাকি দুজনকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয় বলে জাপানে করা দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। ২ জুলাই সকালে সশস্ত্র বাহিনীর অভিযানে জিম্মি সংকটের অবসানের পর ভিতর থেকে ২০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়, যাদের মধ্যে নয়জন ইতালীয়, সাতজন জাপানি, একজন ভারতীয় এবং তিনজন বাংলাদেশি। সংবাদপত্রের তথ্য অনুযায়ী, মোট ৯০৬ জন জাপানি বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাস করছেন। এর আগে গত বছর রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও জঙ্গি হামলায় নিহত হন। ২০১৩ সালে আলজেরিয়ায় ১০ জাপানি আইএসের হাতে নিহত হওয়ার পর বিদেশের মাটিতে এবারই একসঙ্গে সাত জাপানি নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটল। খবর বিডিনিউজের।

সর্বশেষ খবর