বুধবার, ২০ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

যা বলব ইশারা ইঙ্গিতে বুঝে নেবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

যা বলব ইশারা ইঙ্গিতে বুঝে নেবেন

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য দেব না। যা বলব ইশারা-ইঙ্গিতে বুঝে নেবেন। পঁচাত্তরের মতো মর্মান্তিক ঘটনার আর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। বাঙালি শুধু বীর নয়, বেইমানেরও জাতি। পঁচাত্তরে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারিয়েছি। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের মতো ঘটনা এ দেশে যেন আর না ঘটে সেজন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ গতকাল দুপুরে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, গুপ্তহত্যা ও সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি নষ্ট করার প্রচেষ্টার প্রতিবাদে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান ইসমত কাদির গামা, মহাসচিব (প্রশাসন) এমদাদ হোসেন মতিন প্রমুখ বক্তব্য দেন। এর আগে সকালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জাতীয় নির্বাহী কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে সংসদের গঠনতন্ত্রের বিভিন্ন ধারা-উপধারা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে সংসদের কমিটির মেয়াদ তিন বছরের পরিবর্তে পাঁচ বছর করা। আলোচনা সভা শেষে মিছিলসহ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনে গিয়ে শপথ নেন মুক্তিযোদ্ধারা।

সৈয়দ আশরাফ বলেন, পৃথিবীতে অনেক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডই ঘটেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর গোটা পরিবারকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা পৃথিবীর অন্য কোথাও ঘটেনি। শুধু তাই নয়, একটি দলকে ধ্বংস করার চেষ্টাও চলে। তিনি বলেন, ‘আমি খোলাখুলি বলতে চাইছি না, কিন্তু কী বোঝাতে চাইছি তা বুঝতে পারছেন বলে বিশ্বাস করি। রাজনীতিতে নীরবতা রয়েছে। ভয় এখানেই। মনে রাখবেন, গাছের পাতা যখন নড়ে না, ঝড়ের ভয় ঠিক তখনই। আর এ কারণেই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সরকারের কোনো অঙ্গসংগঠন নয়। এটা মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাধীন সংগঠন। এই সংগঠন পরিচালিত হবে নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা। আপনারা তো (মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল) সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নন, তাহলে কেন আপনারা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মতো তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন? এটা তো হতে পারে না।’ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, এ বছর থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এ বছর থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা দুটি উৎসব বোনাস পাবেন, যার পরিমাণ ২০ হাজার টাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছেন। নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে মুক্তিযোদ্ধারা তাকে আরও সুদৃঢ় করবে।

সর্বশেষ খবর