মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

ডাচ-বাংলা চেম্বার সভাপতির খোঁজ মেলেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডাচ-বাংলা চেম্বার সভাপতির খোঁজ মেলেনি

ডাচ-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি হাসান খালেদের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে রহস্য বাড়ছে। তবে গতকাল পর্যন্ত কোনো ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলছে, নিখোঁজ হওয়ার সময় মোবাইল ফোনের সর্বশেষ অবস্থান ছিল তার বাসার আশপাশে। কিন্তু ওই এলাকা থেকে কেউ তাকে তুলে নিয়েছে এরকম দৃশ্য কেউ দেখেনি। ওষুধ কেনার জন্য বাসা থেকে বের হলেও আশপাশের কোনো ওষুধের দোকানে গিয়েছেন কি-না তা নিশ্চিত হতে পারেনি তারা। তবে হাসান খালেদের পারিবারিক বিষয় থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক বিষয়গুলো তদন্ত করছে পুলিশ। ইতিমধ্যে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া বলেন, বাসার আশপাশ এলাকাতেই তার ফোনটি বন্ধ হয়ে গেছে বা বন্ধ করা হয়েছে। হাসান খালেদের ফোনের সর্বশেষ অবস্থান দেখা গেছে ধানমন্ডির ৪/এ নম্বর সড়কের আশপাশ এলাকাতেই। হাসান খালেদের ভাই মুরাদ হাসান বলেন, কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা আছে বলে আমাদের জানা নেই। তাকে কেউ কখনো হুমকি-ধমকিও দেয়নি। ভদ্র-শান্ত স্বভাবের মানুষ তিনি। ধানমন্ডির ওই বাসায় স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বসবাস করেন তিনি। ওই বাসার কাছেই ঝিগাতলায় পৈতৃক বাড়িতে থাকেন তার অন্য ভাইয়েরা। হাসান খালেদের নিখোঁজের বিষয়ে তার স্ত্রী কোনো কথা বলতে চাননি। এ বিষয়ে মুরাদ হাসান জানান, শনিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামাজ পড়েছেন হাসান খালেদ। শনিবার অফিসে যান সকাল ১০টার দিকে। প্রতিদিন তার প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা রেজাকে সঙ্গে নিয়ে বের হন তিনি। মুরাদ হাসান আরও বলেন, ওই দিনও রেজা খালেদকে তার জন্য আরও আধাঘণ্টা অপেক্ষা করতে বলে জানান তিনি আসতেছেন। এর মধ্যেই বাসায় যান দিলারা মোর্শেদের ভাই শরীফুল আলিম। তবে ওষুধ কিনতে নিচে যান তিনি। গেটের দায়িত্বে ছিলেন রাসেল। হাসান খালেদকে পায়ে হেঁটে বের হতে দেখেছেন তিনি। সকাল ৯টার পরে বাসায় ঢুকেন রেজা। ওই সময় হাসান খালেদকে কল দিয়ে ফোন বন্ধ পান তিনি। দিলারা মোর্শেদ ও তার ভাই ফোনে চেষ্টা করে তা বন্ধ পান। তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, হাসান খালেদের ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে হাসান খালেদের স্ত্রী দিলারা মোর্শেদকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কারও সঙ্গে তার ব্যবসায়িক বিরোধ ছিল কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারী ধানমন্ডি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খায়রুল বাশার বলেন, থানা পুলিশ ছাড়াও গোয়েন্দারা বিষয়টি তদন্ত করছেন। হাসান খালেদের পারিবারিক, ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। হাসান খালেদের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ২৫ বছর ধরে ব্যবসা করছেন হাসান খালেদ। নেদারল্যান্ডস থেকে ক্রোকডাইলের পণ্য আমদানি করতেন তিনি। এ ছাড়াও তার কেটি কনাসালটেন্সি ফার্ম রয়েছে। তার ব্যবসায়িক অফিস নিউ ইস্কাটনে। কলেজপড়ুয়া একমাত্র সন্তান জেবা, স্ত্রী দিলারাকে নিয়ে ধানমন্ডির ৪/এ নম্বর রোডের ৪৫ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলার বাসায় থাকতেন হাসান খালেদ। তার পিতার নাম মোহাম্মদ মহসিন। গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার দাগনভূইয়া থানার শুভপুর গ্রামে। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।

সর্বশেষ খবর