শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা
দুই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক

জঙ্গি হামলা নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ ভারত

ঋতুপর্ণা রায়, নয়াদিল্লি

সন্ত্রাসের অশুভ ঝড়ো হাওয়ায় যখন কাঁপছে বাংলাদেশ এবং ভারতসহ গোটা উপমহাদেশ, ঠিক সেই সময় দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর বসল দুই দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক। গতকাল বিকালে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, বৈঠকে কোনো সন্ত্রাসবিরোধী চুক্তি হয়নি ঠিকই, কিন্তু গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার  করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে। আগামী ১৬ অক্টোবর গোয়াতে বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আসার কথা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এখন পর্যন্ত খবর অনুযায়ী এ সফরটিতে তিনি নয়া দিল্লি আসছেন না। তবে গোয়াতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বিপক্ষীয় পার্শ্ববৈঠক সারবেন শেখ হাসিনা। গতকালের বৈঠকে ভারতীয় নেতৃত্ব গুলশান কাণ্ড সম্পর্কে বিশদে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশে আইএসের উপস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ কর্মপদ্ধতির কোনো আগাম গোয়েন্দা রিপোর্ট রয়েছে কিনা সে ব্যাপারেও কথা হয়েছে। সূত্রের খবর, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে নয়া দিল্লিকে জানানো হয়েছে, গুলশান কাণ্ড ঠাণ্ডা মাথার পরিকল্পিত আক্রমণ। বাংলাদেশে আইএসের উপস্থিতি রয়েছে এ কথা পশ্চিমাসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের মগজে যদি গেঁথে দেওয়া যায়, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিগড়ে যাবে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হচ্ছে, গুলশান কাণ্ডকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে ওই নাশকতা খুব হিসাব কষেই করা হয়েছিল। এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘ইতালির সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক খুবই ভালো। সে দেশে আমাদের বস্ত্রশিল্পের রপ্তানির বিষয়টি রয়েছে। পেশাগতভাবেও বহু বাংলাদেশি ইতালিতে বসবাস ও জীবন নির্বাহ করেন। ফলে একজন ইতালীয়কে খুন করায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। আস্থার অভাব ঘটতে পারে, ত্রাসের সঞ্চার হতে পারে। পাশাপাশি জাপানও আমাদের একজন বড় বিনিয়োগকারী দেশ। ফলে সে দেশের সামনেও আমাদের ছোট করার চেষ্টা হয়েছে একজন জাপানিকে হত্যা করে।’ তবে গতকাল বৈঠকটি যে সাম্প্রতিক নাশকতার ঘটনার জন্য আপৎকালীন ভিত্তিতে হচ্ছে না এ কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ। সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্তার মতে, ‘এ বৈঠক পূর্বনির্ধারিতই ছিল। আসলে ২০১৩ সালের পর এ বৈঠক না হওযার কারণ হলো দীর্ঘদিন আমাদের দেশে পৃথকভাবে কোনো পূর্ণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন না। প্রতিমন্ত্রী ছিলেন এবং শেখ হাসিনাই এ মন্ত্রণালয়ের কাজ দেখতেন।’ আসাদুজ্জামান খান কামাল আসার পরই বৈঠকের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। কিছুটা সময় লাগল এটা ঠিক।’ তবে সাম্প্রতিক নাশকতা কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে এ বৈঠকটি না হলেও, বর্তমান ঘটনাবলি বৈঠকে অগ্রাধিকার পেয়েছে স্বাভাবিকভাবেই।

সর্বশেষ খবর