রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

তিন বাউলের চুল কেটে আখড়ায় আগুন

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার গোবিন্দপুরে আখড়ায় ঢুকে বাউলদের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বাউলদের অভিযোগ, হামলাকারীরা তাদের কয়েকজনকে গাছে বেঁধে মারধর করে চুল কেটে দেয়। ঘরবাড়িও পুড়িয়ে দেয়।

শুক্রবার  গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল সকাল ৯টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, আখড়ার তিনটি ঘরের মধ্যে দুটি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে ধোঁয়া উঠছে। বাউল জুলমত শাহ (৬৫) জানান, ছয় বছর আগে তিনি তিন বিঘা জমির ওপর আখড়া তৈরি করেন। প্রতিবছর ১৫ বৈশাখ, ৫ আষাঢ় ও ২৫ ফাল্গুন সেখানে আসর বসে। দেশ-বিদেশ থেকে শত শত বাউল সেখানে যান। জুলমত শাহ অভিযোগ করেন, রাত ১২টার দিকে তিনি ছাড়া অন্যরা ঘুমিয়ে ছিলেন। এমন সময় ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী আট-নয়জন যুবক আখড়ায় ঢুকে অধিনায়ক কে, তা জানতে চায়। পরিচয় দিলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে আখড়ার বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে গাছের সঙ্গে বৈদ্যুতিক তার দিয়ে বেঁধে রাখে। এরপর গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে চুল কেটে দেয়। জুলমতের গুরুভাই প্রতাপপুর গ্রামের রিনুপদ হালদার (৬৮) জানান, জুলমতের পর তাকেও একই কায়দায় আরেকটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে চুল কেটে দেওয়া হয়। আখড়ায় থাকা মোমেনা খাতুন (৫৫) নামের এক নারীকে ঘরেই হাত, পা ও চোখ বেঁধে ফেলে রাখা হয়। আখড়ায় থাকা বাউলেরা বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত দুর্বৃত্তরা আখড়ায় তাণ্ডব চালায়। পরনের লুঙ্গি, গামছা ও শাড়ি ছাড়া আর সবকিছুই আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়েছে। সকালে জেলা বাউল সংঘের সভাপতি ধীরু বাউলসহ নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ রফিকুল আলম খানের ভাষ্য, দুটি বসতঘর পুড়ে গেছে। তবে বড় ঘরটি অক্ষত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের থানায় অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। দুর্বৃত্তদের ধরতে অভিযান চলছে। এর আগে ১৬ জুলাই রাতে দুর্বৃত্তরা জীবননগর উপজেলার একতারপুরে হামলা চালিয়ে বাউলদের আখড়ায় ভাঙচুর চালায়। সেখানে তিন বাউলকে কুপিয়ে জখম করা হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ জামায়াত-শিবিরের চার কর্মী ও সমর্থককে আটক করেছে।

সর্বশেষ খবর