রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের ‘জ’ও থাকবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের ‘জ’ও থাকবে না

সৈয়দ আশরাফ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, জঙ্গি তো দূর কথা ভবিষ্যতে জঙ্গির ‘জ’ও থাকবে না। তিনি বলেন, দু-একটি জঙ্গি হামলা চালিয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করা যাবে না। সুতরাং ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা ভীত নই। দু-একটি সন্ত্রাসী হামলা ঘটেছে। এমন দু-চারটি ঘটনা ভবিষ্যতেও ঘটতে পারে। সেগুলো যথাযথভাবে মোকাবিলা করেই গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা হবে। তিনি গতকাল বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যুব সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে আরও বলেন, বিশ্বব্যাপীই জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলা ঘটছে। এটা শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়। এ সমস্যার কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী-জঙ্গিগোষ্ঠীর জনশক্তি নেই, জনভিত্তিও তাদের নেই। জঙ্গিরা গুপ্তহত্যা করে। যারা গুপ্তহত্যা করে তারা বীর নয়, তারা কাপুরুষ। তারা কোনো সংগ্রামে, কোনো যুদ্ধে জয়ী হতে পারবে না। দেশের জনগণের শক্তির কাছে তারা পরাজিত হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এই যুব সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগ। সংগঠনের সভাপতি মাঈনুল হোসেন খান নিখিলের সভাপতিত্বে যুবলীগের নেতা-কর্মীদের শপথবাক্য পাঠ করান যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। উত্তরের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেনের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল হোসেন, কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম এমপি, কেন্দ্রীয় যুবলীগের হারুনুর রশিদ, শহীদ সেরনিয়াবাত, আনোয়ার হোসেন, মাহবুবুর রহমান হিরণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের মোল্লা মো. আবু কাওছার, যুব মহিলা লীগের নাজমা আক্তার, অপু উকিল, যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, মিজানুল ইসলাম মিজু প্রমুখ। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ বলেন, নিরীহ বিদেশিকে হত্যা করে, দু-এক জনকে হত্যা করে বিশ্বে পবিত্র ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। একজন, দুজন মানুষ হত্যা করে জিহাদ করা যায় না। তিনি বলেন, দেশে দু-একটি ঘটনা ঘটলেই শহীদ মিনারে বড় সমাবেশ করার দরকার নেই। আমি ভীত নই। আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মানুষ যে রাষ্ট্রের শাসনকাজ পরিচালনা করছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে আমরা অনেক পাহাড় ডিঙিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যের সন্ত্রাসবাদের প্রসার তুলে ধরে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, লিবিয়ায় গাদ্দাফির পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। ইরাকেও নয়। সেখানে আমরা দেখছি শুধু বিশৃঙ্খলা আর বিশৃঙ্খলা। তারা কখনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ পায়নি, চর্চাও করেনি। আমাদের দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দীর্ঘদিনের। আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আছি। দু-একটি জঙ্গি হামলা করে সরকার পতন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করা যাবে না। আশরাফ বলেন, আমরা কোনো ধর্মকে কটাক্ষ করব না। তাহলে তারাও আমাদের পবিত্র ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করবে না। সব ধর্মের প্রতি সম্মান রেখেই আমাদের কথা বলতে হবে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস কোনো ধর্মের সমস্যা নয়, কোনো দেশের সমস্যা নয়। এটা বৈশ্বিক সমস্যা। তিনি বলেন, মিথ্যা দিয়ে হয়তো হাজার হাজার মানুষকে ভোলানো যায়। লাখ লাখ-কোটি কোটি মানুষকে ভোলানো যায় না। যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, যুবলীগ নেতা-কর্মীদের শপথ হচ্ছে ‘যুব জনতা এক হও, সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’। রাজধানীর গুলশানে ও শোলাকিয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত পুলিশ সদস্যদের নামে এলাকায় নামফলক করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এমপি-মন্ত্রীদের এলাকায় শুধু তাদের নামেই নামফলককরণ করা হয়। ওইসব এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা ও যারা মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন তাদের নামে নামকরণের জোর দাবি জানান। এ ছাড়া জঙ্গি হামলা মোকাবিলা করতে গিয়ে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন তাদের নামে নামফলক করতে হবে। যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, শুধু মন্ত্রী-এমপিদের নামে নামকরণ যুবলীগ মেনে নেবে না।

সর্বশেষ খবর