বুধবার, ৩ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

শাজনীন হত্যায় শহীদের ফাঁসি বহাল অন্যরা খালাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

শাজনীন হত্যায় শহীদের ফাঁসি বহাল অন্যরা খালাস

ট্রান্সকম গ্রুপের কর্ণধার লতিফুর রহমানের মেয়ে শাজনীন তাসনিম রহমানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। এ ছাড়া অন্য চারজনকে খালাস দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শেষে গতকাল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেয়। এর আগে ২০০৩ সালে বিচারিক আদালত শহীদসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। পরে হাইকোর্ট শহীদসহ পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে একজনকে খালাস দেয়। গতকাল আপিল বিভাগ সেই পাঁচজনের মধ্যে শহীদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে বাকিদের খালাস দেয়। আপিল বিভাগে খালাস পাওয়া চারজন হলেন ঘটনার সময় শাজনীনের বাড়ির সংস্কারকাজের দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসান, হাসানের সহকারী বাদল এবং গৃহপরিচারিকা দুই বোন এস্তেমা খাতুন (মিনু) ও পারভীন। শহীদসহ এ পাঁচজনই এখন কারাগারে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শহীদ ওই সময় ছিলেন লতিফুর রহমানের বাড়ির পরিচারক। গত ১১ মে এ ঘটনায় ফাঁসির আদেশ পাওয়া পাঁচ আসামির আপিলের শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়। আসামিপক্ষে আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এস এম শাহজাহান শুনানি করেন। বাদীপক্ষে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, এ এম আমিনউদ্দিন, এ এস এম আবদুল মোবিন ও সরোয়ার আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান। বাদীপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, রায়টি হাতে পাওয়ার পর বিচার-বিশ্লেষণ করে এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি জানান, রায় দেওয়া এ মামলাটি সিআইডির করা। নিহত শাজনীনের বাবা লতিফুর রহমান প্রথমে যে মামলাটি করেছিলেন, তার বিচার চলছিল নিম্ন আদালতে। গতকাল সেই মামলাটি আপিল বিভাগ বাতিল করেছে। মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাজধানীর গুলশানে লতিফুর রহমানের বাড়িতে খুন হন তার মেয়ে শাজনীন তাসনিম রহমান। শাজনীন তখন ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। ওই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে ২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী রহমতউল্লাহ রায়ে শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে হাসান, শহীদ, বাদল, এস্তেমা খাতুন, পারভীন ও কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডলকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হিসেবে মামলাটি ওই বছরই হাইকোর্টে আসে। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরাও আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি শেষে ২০০৬ সালের ১০ জুলাই হাইকোর্ট হাসান, শহীদ, বাদল, মিনু ও পারভীনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখে। অন্য আসামি কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডলকে হাইকোর্ট খালাস দেয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা চার আসামি হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীন। ২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল এ চারজনকে আপিলের অনুমতি দেয় আপিল বিভাগ। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অন্য আসামি শহীদ জেল আপিল করেন। গত ২৯ মার্চ আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়।

সর্বশেষ খবর